মাথা নোয়াবো না শহীদ হবো-সাক্ষাৎকারে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার

সিরিয়ায় সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ওপর আরব লীগসহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বেড়েছে। তবে বাশার বলেছেন, বিদেশি চাপের কাছে তিনি মাথানত করবেন না। প্রয়োজনে লড়াই করে শহীদ হবেন। ব্রিটেনের সানডে টাইমস পত্রিকার সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বাশার আরও বলেন, আরব লীগ পশ্চিমা আগ্রাসনের অজুহাত সৃষ্টি করছে।
সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের পরিণতি হবে ভয়াবহ। বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধে আরব লীগের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রাক্কালে শনিবার বাশারের এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। শনিবার মধ্যরাতে আরব লীগের আলটিমেটাম শেষ হয়েছে। এদিকে সিরিয়ায় সহিংসতা অব্যাহত আছে। রোববার ভোরে দামেস্কে ক্ষমতাসীন বাথ পার্টির দফতরে রকেট চালিত গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে বাশারের পক্ষ ত্যাগকারী বিদ্রোহী সেনারা। বাশারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে সশস্ত্র
লড়াইরত ফ্রি সিরিয়ান আর্মি এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। আট মাস ধরে সহিংসতা চললেও এই প্রথম রাজধানী দামেস্কে হামলা হলো। এর আগে শনিবার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে।
আরব লীগ রোববার বলেছে, শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে দামেস্কে ৫০০ পর্যবেক্ষক পাঠানোর পরিকল্পনা পরিবর্তনে সিরিয়ার অনুরোধ মেনে নেওয়া হবে না। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিরিয়া সংকটের সমাধান ও সেদেশের বেসামরিক লোকদের রক্ষায় আরব লীগ পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাতে চায়। সিরিয়া এ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার যে প্রস্তাব
দিয়েছে তা মেনে নিলে মিশনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। আরব লীগ এ মাসের প্রথম দিকে সই করা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সিরিয়ায় পর্যবেক্ষক পাঠানোর পরিকল্পনা নেয়। তবে সিরিয়া এ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার অনুরোধ জানায় এবং পর্যবেক্ষকের সংখ্যা কমিয়ে ৪০ জন করার প্রস্তাব দেয়। আরব লীগ তাদের শান্তি চুক্তি অনুযায়ী উত্তেজনাপূর্ণ এলাকা থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধে সময়সীমা বেঁধে দেয়। প্রেসিডেন্ট বাশার এ আলটিমেটাম মেনে না নিলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেয় আরব লীগ। এর আগে আরব লীগে সিরিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্কও বাশারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এনবিসি নিউজকে বলেছেন, সিরীয় সরকারের সঙ্গে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও ভারী অস্ত্রসজ্জিত একটি বাহিনীর গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে। রাশিয়া সব পক্ষের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। মস্কোয় রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঙ্কো ফিলন বলেন, সিরিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ানো অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সিরিয়া সংকট নিরসনে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। তারা এ প্রস্তাবের প্রতি ব্যাপক সমর্থন আশা করছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক মন্তব্য করেন, আসাদ এমন অবস্থানে গেছেন যেখান থেকে ফেরার সুযোগ নেই। তাকে লিবিয়া ও ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত নেতাদের মতো ভাগ্যবরণ করতে হবে। তবে ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) প্রধান একমেলেদ্দিন ইশানোগলু বলেছেন, ওআইসি সিরিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর এএফপি, বিবিসি, সিএনএন, গার্ডিয়ান অনলাইনের।

No comments

Powered by Blogger.