গাদ্দাফি নাইজারে পালিয়েছেন?

লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি সম্ভবত প্রতিবেশী দেশ নাইজারে পালিয়েছেন। নাইজারের সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র এ কথা জানায়। তবে গাদ্দাফির একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, কর্নেল গাদ্দাফি সুস্থ আছেন এবং তিনি লিবিয়ায় অবস্থান করছেন।
সামরিক বাহিনীর ওই সূত্রটি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, কয়েক ডজন গাড়ির একটি বহর নাইজারের উত্তরাঞ্চলের শহর আগাদেজে ঢুকতে দেখা গেছে। গাড়ির বহরটি আগাদেজ থেকে নিয়ামের দিকে যায়। গত সোমবার রাতে নাইজারে প্রবেশ করা ওই গাড়ির বহরে গাদ্দাফি বা তাঁর কোনো ছেলে থাকতে পারেন বলে গুজব রয়েছে। এত বড় গাড়ির বহর সচরাচর দেখা যায় না।
আগাদেজ শহরের বেসরকারি একটি বেতারের একজন সাংবাদিক জানান, তিনি কয়েক ডজন গাড়ির একটি বহর রাজধানী নিয়ামের দিকে যেতে দেখেছেন। তিনি আরও জানান, কয়েকজন ব্যক্তি ওই গাড়িবহরে নাইজারের সাবেক বিদ্রোহী নেতা রিসা আগ বউলাকে দেখেছেন। গাদ্দাফির সঙ্গে বউলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
নাইজার সরকারের অপর একটি সূত্র এর আগে জানায়, গত রোববার তাদের সীমান্ত দিয়ে গাদ্দাফির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক প্রধান মনসুর পালিয়ে গেছেন। তবে অন্য এক খবরে জানা গেছে, মনসুর লিবিয়ার শহর বানি ওয়ালিদে গাদ্দাফির দুই ছেলের সঙ্গে রয়েছেন।
গাদ্দাফির মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম গত সোমবার সিরিয়াভিত্তিক অ্যারাই টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, গাদ্দাফি সুস্থ আছেন। তিনি লিবিয়া রক্ষার পরিকল্পনা করছেন। তাঁর অনুগত লোকজনকে সংগঠিত করছেন। মুসা বলেন, ‘আমরা এখনো শক্তিশালী।’ গাদ্দাফির দুই ছেলে বিদ্রোহীদের প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করছেন; তবে গাদ্দাফির ছেলেদের নাম উল্লেখ করেননি মুসা। জয় অথবা মৃত্যু—এই অঙ্গীকার করে গাদ্দাফির এ মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা লিবিয়া ও আরব বিশ্ব রক্ষায় লড়াই করব।’ বিদ্রোহীদের পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর এজেন্ট বলে আখ্যা দেন মুসা ইব্রাহিম। তারা খুন, ধর্ষণ ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে লিবিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কামাল হোদেশিয়া বলেন, গাদ্দাফি বাহিনীকে আত্মসমর্পণের জন্য ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। কামাল হোদেশিয়া বলেন, ‘আমরা আশা করি, গাদ্দাফি বাহিনী বেঁধে দেওয়া সময়সীমার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাবে।’
যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বেলহাজ: লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতা আবদেল হাকিম বেলহাজ যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জিততে পারেন। মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দারা ২০০৪ সালে এশিয়ার কোনো দেশ থেকে বেলহাজকে আটক করে লিবিয়ার হাতে তুলে দেন। লিবিয়ায় হস্তান্তরের পর তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। বর্তমানে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের গঠিত ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এনটিসি) নিযুক্ত ত্রিপোলির সামরিক প্রধান বেলহাজ যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাজ্যের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২০১০ সালের জুলাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এতে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা বিদেশের মাটিতে জঙ্গিদের আটকের পর নির্যাতনে সহযোগিতা করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি জানান, তদন্তে গাদ্দাফির সঙ্গে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর সম্পর্কের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।

No comments

Powered by Blogger.