গল্প- দৌড় by শওকত চৌধুরী

রাত তিনটা। মোহন কুণ্ডলী দিয়ে মেঝেয় পড়ে আছে। কুণ্ডলী দিয়ে মেঝেয় পড়ে থাকার কারণ সামনের চেয়ারে উপবিষ্ট ভদ্রলোকটির বুটের লাথি।
মোহনের চোখ বাঁধা। হাত বাঁধা। ঠোঁটেরও কোথাও কোথাও কেটে গেছে। মুখ রক্তে মাখামাখি।
ভদ্রলোক হয়তো ঝুঁকে এসে তার মুখের ওপর সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ছেন। মোহনের নাকে সিগারেটের কটু গন্ধ এসে লাগছে।
মোহন!
জি স্যার!
করের হাট ট্রিপল মার্ডারটা নিয়ে দেশ উত্তাল, বিষয়টা বুঝতে পারছিস?
জি স্যার!
বুঝতে পারলে ঘটনাটা বল।
আমি জানি না, স্যার!
নো মোর রিপিটেশন, মোহন! নিজেকে ‘ঝামেলায়’ জড়াস না। একবার ঝামেলায় পড়ে গেলে আর কিন্তু উঠতে পারবি না।
মোহন মনে মনে হাসে। আজ রিমান্ডের পঞ্চম দিন। রিমান্ডের পঞ্চম দিনে কেউ কখনো ঝামেলা নিয়ে ভয় পায় না। যে রিমান্ডের প্রথম দিন পার করেছে, তার কাছে কোনো ঝামেলাই আর ঝামেলা নয়।
মোহন!
জি স্যার!
তুই কি বুঝতে পারছিস ঝামেলা জিনিসটা কী? এটা ‘অন্য জিনিস’, বুঝতে পারছিস না?
হঠাৎ মোহনের বুকটা কেঁপে উঠল। অন্য জিনিস মানে কী? নাহারকে আটক করে ফোনের মাধ্যমে তার কান্না শোনানো? ভদ্রলোক কি এখন জঘন্য এই কাজটিও করবেন? নাহার সন্তানসম্ভবা। কাজটি করলে বিপদ ঘটে যাবে! মহা বিপদ!
ঘটনাটা বলবি কি না ভেবে দেখ। পাঁচ মিনিট সময় দিলাম। পাঁচ মিনিট অনেক সময়।
গলার ভেতর মরা রক্ত হয়তো ডিমের পুডিংয়ের মতো জমে উঠেছিল। মোহনকে গলার রক্ত-পুডিং ছাড়ানোর জন্য দুবার কাঁশি দিতে হলো।
মোহন!
জি স্যার!
চা খাবি?
মোহন কোনো কথা বলল না।
ভদ্রলোক মোহনকে চা খাওয়ার কথা বলে মিজান নামের একজনকে ডাকতে থাকলেন। মিজান সাহেব বোধহয় হুকুমের তামিল। ডাকা মাত্রই ছুটে এলেন।
ডেকেছেন, স্যার?
ওর হাত-পা খুলে দেন। হাত-মুখ ধুয়ে দেন। হাত-মুখ ধুয়ে আমার কামরায় নিয়ে আসেন।
জি স্যার।
আর শুনুন, একসঙ্গে আমাদের দুজনকে চা দেবেন।
জি।
এ কাপ অব টি উইথ জ্যাক দ্য রিপার। জ্যাক দ্য রিপার কী জানেন তো?
জি না।
না জানলেও ক্ষতি নেই। জানার জন্য জ্যাক দ্য রিপার ভালো কিছু নয়। ভালো কিছু হচ্ছে প্লেটো। প্লেটোকে জানেন তো?
জি না।
প্যারাবল অব দ্য ক্যাভের কথা শুনেছেন কখনো?
জি না।
ভদ্রলোক মুখ বাঁকা করে হাসলেন। এই হাসির অর্থ—গণ্ডমূর্খ কোথাকার!
চোখ খোলার পর সর্বপ্রথম মোহন যাঁকে দেখল, তিনিই বোধ হয় মিজান সাহেব। মিজান সাহেবের মুখে আধাখোঁচা দাড়ি। দেখতে কিছুটা ইউনিভার্সিটিপড়ুয়া শিক্ষকদের মতো।
মিজান সাহেব বোধহয় তাঁকে গোপন কিছু বলতে চান। বারবার চারপাশটা দেখছেন। চারপাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে তিনি ফিসফিস করে বললেন, এই যাত্রায় বোধ হয় তুই বেঁচে গেছিস। বিশ্বাস হচ্ছে না?
কথাটা মোহনের আসলেও বিশ্বাস হলো না। তার মাথার ভেতর পাঁচ মিনিটের ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে বাজতেই থাকল।
স্যার যে বলেছেন পাঁচ মিনিট সময় দিয়েছেন, ওটা ভুলে যা। এটা তিনি করেছেন একিউজডকে মেন্টালি ডিস্টার্ব করার জন্য। ইটস এ গেম!
মোহন কোনো কথা বলল না। সে একবার জামার বাহু দিয়ে মুখের রক্ত মোছার চেষ্টা করল।
শোন, সারের ধারণা, তিনি ছাড়া বাকি সবাই গণ্ডমূর্খ। কিন্তু আমি গণ্ডমূর্খ নই। আমি জ্যাক দ্য রিপারের আদ্যোপান্ত জানি। লোকটা হোয়াইট চ্যাপেল মার্ডারের সঙ্গে জড়িত। হোয়াইট চ্যাপেল জায়গাটা কোথায় জানিস তো?
না।
লন্ডনের পূর্বপ্রান্তে। আর হোয়াইট চ্যাপেলের পাশেই মনিকা আলির সেই বিখ্যাত ব্রিকলেন। বুকার ব্রিকলেন। শুধু জ্যাক দ্য রিপার নয়, প্যারাবল অব দ্য ক্যাভ কী, সেটাও আমি জানি। ওটা একটা প্লেটোর ফিকশনাল এলিগোরি, বুঝেছিস?
মোহন এবারও কোনো কথা বলল না। জামার বাহু দিয়ে আরও একবার মুখের রক্ত মোছার চেষ্টা করল।
ভদ্রলোকের নাম তাহসানুল ইসলাম।
তাহসান সাহেব বসে আছেন ফ্যানের নিচে। মোহনকে দেখামাত্র তিনি প্রায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন।
আরে, মোহন সাহেব! বসুন!
মোহন অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটাকে তার কাছে রহস্যময় মনে হচ্ছে। রহস্যময় মনে হওয়ার কারণ, তিনি এখন তাকে আপনি আপনি করে সম্বোধন করছেন।
পিরিচে চা ঢাকা আছে। চা নেন।
মোহন চা নেবে কি না বুঝতে পারছে না। যে লোক এতক্ষণ ধরে বুকের ওপর বুটের লাথি দিচ্ছিল, তার সঙ্গে বসে চা খাওয়াটা কি ঠিক হবে?
এটা আমার একটা প্রিয় চা। কুলমামা। নাম শুনেছেন কখনো?
জি না।
এটা কেমোমাইল ফুলের মাথা এবং স্পিয়ারমিন্ট ও মার্শমেলোর পাতার সংমিশ্রণে তৈরি। খেতে একটু মিন্টি ধরনের। মিন্ট বা পুদিনা জিনিসটা আমার খুব পছন্দ। পছন্দের কারণ, আমার মা রোজার দিন সব সময় ছোলার সঙ্গে পুদিনা খান। মায়ের সঙ্গে পুদিনা খেয়ে অভ্যাসটা আমাদেরও হয়ে গেছে। আপনি কি ছোলায় পুদিনা খান?
জি না।
জি না বলার পর মোহন নিজের ওপর খানিকটা বিরক্ত হলো। কেন সে বলল পুদিনা খায় না? সে তো আসলে পুদিনা পছন্দ করে। চকলেটের মধ্যে তার সবচেয়ে প্রিয় ফ্লেবারটি হচ্ছে মিন্ট। তাহলে ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না বলেই কি সে সব কথার জি না করে উত্তর দিচ্ছে?
মোহন সাহেব!
জি স্যার!
চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বসে আছেন কেন? আচ্ছা, এই চা-টা আপনাকে কেন খেতে বললাম জানেন?
জি না।
কারণ এটা নার্ভাস সিস্টেমকে রিলাক্স করে। আমার মনে হচ্ছে, আপনি কোনো একটা ঘটনা নিয়ে বিশেষভাবে উত্তেজিত। উত্তেজনার কারণে আপনার হাতে চায়ের কাপটি কাঁপছে। আমার এই পারসেপশনটি ভুলও হতে পারে। হতে পারে আপনার গায়ে এখন অনেক জ্বর। জ্বরের কারণেই হাত কাঁপছে। আপনার গায়ে কি এখন জ্বর, মোহন সাহেব?
জি না।
(মোহন আবারও মিথ্যা বলল। তার গায়ে আসলেই অনেক জ্বর।)
না হলেই ভালো। আনন্দচিত্তে চায়ে চুমুক দিতে পারবেন।
চা খেতে ইচ্ছে করছে না, স্যার।
তাহলে কি খেতে ইচ্ছে করছে? গরুর মগজ ভুনা দিয়ে পরোটা?
আম খেতে ইচ্ছে করছে। ছোটবেলায় জ্বর হলে মা কেটে কেটে খাওয়াতেন। বিয়ের পর কাকতালীয়ভাবে নাহারও কাজটি করে।
নাহার কি আপনার স্ত্রী?
জি।
ভদ্রলোক প্রথমবারের মতো মোহনের চোখের দিকে তাকালেন।
আমার স্ত্রীর নামও নাহার। এই দিক দিয়ে দেখছি আমার আর আপনার খানিকটা মিল আছে। যেহেতু মিল একটা পাওয়াই গেল, সেহেতু আপনাকে একটা ফেভার দেওয়া যায়, কী বলেন?
মোহন কোনো কথা বলল না।
অন্তত আপনাকে একটা আম খাওয়ানো যায়।
ভদ্রলোক মিজান সাহেবের দিকে তাকালেন।
আম জোগাড় করতে কতক্ষণ লাগবে, মিজান সাহেব?
বেশিক্ষণ না, স্যার। আমার বাসায় আম আছে। গাড়িতে করে গেলে ১০ মিনিট লাগবে।
ঠিক আছে, আপনাকে ১০ মিনিট দেওয়া হলো।
মিজান বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাহসান সাহেব আবারও আগের কথায় ফিরে গেলেন।
তাহলে আপনাকে একটা ঘটনা বলি, মোহন সাহেব। আমার বিয়ের ঘটনা। সিগারেট খাবেন? রিচমন্ড? বিদেশি জিনিস, খেয়ে দেখতে পারেন!
মোহন সিগারেট হাতে নিল। কত দিন পর সে সিগারেট হাতে পেয়েছে!
বিয়ে পড়ানোর কথা রাত আটটায়। বিয়ে পড়ানো হলো রাত দুটোয়। আমরা স্টেজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আছি, কাজির কোনো খবর নেই। খবর নিয়ে জানা গেল, কাজির ছোট মেয়ে বাথরুমের মেঝেয় পা পিছলে পড়ে মরমর অবস্থা। বুঝতে পারছেন ঘটনা?
জি স্যার।
কাজি এল রাত একটার দিকে। দুটোর দিকে বিয়ে হলো। আমরা খেয়েদেয়ে গাড়িতে উঠে দেখি আকাশ-পাতাল ভেঙে কালবৈশাখী আসছে। বুঝতে পারছেন ঘটনা?
জি।
কড়াৎ কড়াৎ বাজ পড়তে শুরু করল। গাছের শিকড়ের মতো চিত্রল হয়ে বিজলি চমকাতে শুরু করল চারপাশে। আমরা বর-কনে গাড়ি থেকে নেমে একটা স্কুলের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কবে ঝড়-তুফান থামবে কে জানে। আর তখনই ঘটল ঘটনাটা! বাতাসের তোড়ের কারণেই কি না একটা সবুজ রঙের সাপ উড়ে এসে পড়ল আমাদের পায়ের সামনে। ট্রি-স্নেক নাহার চিৎকার করে উঠল। একটু পরে দেখলাম সে মূর্ছায়। বাসায় ফিরে নাহারের স্বাভাবিক হতে হতে রাত প্রায় চারটা বেজে গেল। নাহার স্বাভাবিক হলে আমরা দুজন বারান্দায় গেলাম, দেখি ঝড়-বাদল থেমে গেছে, বৃষ্টি ধোয়া আকাশে সুন্দর একথালা চাঁদ উঠেছে, আর জীবনটাকে মনে হচ্ছে খুবই মায়ার জিনিস। মনে হচ্ছে, অনেক দিন ধরে বেঁচে থাকি। আপনার কখনো এমনটা মনে হয়নি মোহন সাহেব?
লোকটার গল্প শুনে মোহন অবাক হয়ে গেল। তাদের বিয়েটাও হয়েছিল ঝড়-তুফানের রাতে। পাত্রীপক্ষের লোকজন বারবার বলছিল, রাতটি তাদের বাড়িতে থেকে যেতে। কিন্তু মোহনের মা কিছুতে রাজি হচ্ছিলেন না। তার ধারণা, কন্যাপক্ষের ঘরে বাসর হলে বরের অকালমৃত্যু হয়। দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু।
মোহনের মা বারবার জানালা দিয়ে বাইরের দিকে উঁকি মারছেন। না, ঝড়-তুফান থামার কোনো সম্ভাবনা নেই। অথচ এদিকে রাত যে দ্রুত গভীর হয়ে আসছে। রাত যত গভীর হচ্ছে, পাত্রীর বান্ধবীরা কন্যার বাড়িতে বাসর সাজানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠছে।
ঝড় থামল না। একসময় মোহন খেয়াল করল, নাহার ঘুমিয়ে পড়েছে।
নাহার না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল? নাহারের মা খবর নিতে এসে দেখলেন, নাহার আসলে মূর্ছা গেছে। এই ঘটনায় নাহারের মায়ের চেপে রাখা গোপন খবরটা সবার জানাজানি হয়ে গেল। গোপন খবরটা হচ্ছে, নাহারের হিস্টিরিয়ার সমস্যা আছে।
মোহনের একবার ইচ্ছে হলো ঘটনাটি তাহসান সাহেবকে বলে। কিন্তু পরক্ষণে মনে হলো, টেবিলের দুই প্রান্তে উপবিষ্ট দুই ব্যক্তির স্ত্রীর নাম, বিবাহকালীন ঘটনা ও স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা এক হলেও তারা আসলে দুইজন দুই প্রান্তের মানুষ। আর টেবিলের দুই প্রান্তের দুটো চেয়ারের ক্ষমতা কখনোই এক হয় না।
মিজান সাহেব আম নিয়ে এসেছেন। তিনি প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন, স্যার, ১০ মিনিট পুরো লাগেনি। নয় মিনিট ৪৩ সেকেন্ড লেগেছে।
গুড।
পিরিচে কেটে রাখা আম থেকে মিষ্টি একটা গন্ধ আসছে। ফ্যানের বাতাসের কারণে গন্ধটা সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে।
মিজান সাহেব বললেন, আম নে, মোহন।
মোহন আম নিল না। তার মনে হলো, তাহসান সাহেব যেকোনো সময় তাকে একটা কঠিন প্রশ্ন করবেন। কারণ ছাইদানিতে সিগারেটের শেষ আগুনটার ঘাড় মুড়ে দিতে দিতে তিনি একদৃষ্টিতে মোহনের দিকে তাকিয়ে আছেন।
মোহন!
তাহসান সাহেবের কণ্ঠটি হঠাৎ করে ভারী শোনাল।
জি স্যার!
পাঁচ মিনিটের জায়গায় একটা ঘণ্টা চলে গেল। কী ভেবেছিস?
ভদ্র্রলোক আবারও তুইয়ে ফিরে গেলেন।
ভেবেছিস কিছু?
মোহন নিশ্চুপ।
ভদ্রলোক এবার মিজান সাহেবের দিকে তাকালেন। গর্জন দিয়ে বললেন, ওকে নিয়ে যান। মকবুলকে বলেন গাড়ি রেডি করতে।
জি স্যার।
ভদ্রলোকের গর্জনে চারপাশে যেন হঠাৎ একটা তরঙ্গের মতো খেলে গেল। মুহূর্তের ভেতর সব কিছুই আবার বদলে গেল। চারপাশ থেকে ক্রমাগত বুটের আওয়াজ বাড়তে থাকল। মনে হলো, কোনো ভয়াবহ যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি চলছে।
মোহনের চোখ বাঁধা হলো। মোহনের হাত বাঁধা হলো।
হাত বাঁধতে বাঁধতে মিজান সাহেব বললেন, তুই আসলেই ‘কামটা’ করছস?
মোহন কোনো উত্তর করল না।
কথা বলছিস না কেন?
মোহনের একবার ইচ্ছে হলো বলে, আমার হ্যাঁ ও না-তে কি কোনো পার্থক্য তৈরি হবে, মিজান সাহেব? কিন্তু সে কোনো কথা বলল না।
তুই কি বুঝতে পারছিস কেন নিয়ে আসতে বলা হয়েছে?
মোহন একবার ঢোক গিলল।
হুম!
না, বুঝতে পারছিস না! তোকে এখনই গাড়িতে তোলা হবে। গাড়ি ছুটে যাবে নির্জন কোনো জায়গার দিকে। তারপর তোকে গাড়ি থেকে নামানো হবে, বলা হবে—দৌড় দে! বুঝতে পারছিস?
মোহন আবারও একটা ঢোক গিলল।
হুম! আমাকে দৌড় দিতে বলা হবে। আর আমি ১০০ গজের বেশি দৌড়াতে পারব না! তার আগেই লুটিয়ে পড়ব মাটিতে! সকালে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হবে, দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত এক।
মিজান সাহেব যেন জীবনে এমন কথাটি আর শোনেননি। তিনি বিস্ময়-রুদ্ধ হয়ে বললেন, তুই তাহলে বুঝতে পারছিস, মোহন!
মিজান সাহেব, আমাকে কি একটা সুযোগ দেওয়া যায় না? আমার স্ত্রী প্রেগন্যান্সির ক্রিটিক্যাল স্টেজে। আমার দৌড়ের ঘটনাটি শুনলে তার হয়তো মিসক্যারেজ হয়ে যাবে! আমাকে কি আর কয়েকটা দিন সময় দেওয়া যায় না?
মিজান সাহেব কোনো কথা বললেন না।
মোহনের চোখে বারবার নাহারের মুখটা ভেসে উঠল। নাহার বলেছিল, বাবুটা হওয়ার সময় তুমি কিন্তু আমার হাত ধরে বসে থাকবে।
মোহন জানে, সে জীবনেও কাজটা করবে না। তাও সে বলেছিল, আচ্ছা। আজ মনে হচ্ছে, সে নাহারের কোনো কথাই রাখতে পারেনি। সামান্য একটা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করে কত টাকাই বা সে বেতন পেত। জীবনে কখনো নাহারকে একটা ভালো শাড়ি পর্যন্ত সে দিতে পারেনি!
গাড়ি ছুটছে তীব্র বেগে। মিজানের দুই পাশে দুইজন করে চারজন বসা। অবশ্য এটা তার ধারণার কথা। চারজনের বেশি-কমও হতে পারে। কারণ সে তো কোনো কিছুই দেখতে পাচ্ছে না!
=============================
বাংলা ঋতু-মাসের নামবিচার  যেভাবে মায়ের মন জয় করল বাবা  মানিক পীরের গান  গল্প- চুপি চুপি বাঁশি বাজে  গল্প- বিধুহীন  গল্প- অসমাপ্ত চুম্বনের ১৯ বছর পর...  গল্প- বসন্ত বিলাপ  খোয়াবের প্রতিলিপি  গল্প- জিঞ্জির ফেরা  দুর্লভ সময়ের হলফনামা  ইচ্ছা ছিল কবি হওয়ার  আমার গ্রন্থাগার  সোনার কমলার খোঁজে  রূপবান ঢাকার রক্তক্ষরণ  নারী জীবনের অচলায়তন  'ত্যাগের' মূল্যায়ন ও মুক্তকণ্ঠ তারুণ্য  মূল সংবিধান সংরক্ষণে সরকারের ইউটার্ন  তুরস্কে জেনারেলদের পদত্যাগ কেন?  ছোট দলগুলো ফুরফুরে মেজাজে!  কোচিং ব্যবসা এবং শিক্ষার বেহাল দশা  গল্প- লঞ্চের আপার ক্লাসে বাচ্চা হাতি  গুরুপল্লির আশ্রমে ভর্তি না হয়েই  মুক্তিযুদ্ধের ১০ বই  মগ্নচৈতন্যের বর্ণময় অভিঘাত  গল্প- চিনেজোঁক  পুস্তক প্রকাশনা ও বাংলা একাডেমীর বইমেলা  শাহি মনজিলে সাহিত্য উৎসব by শাহীন আখতার  বাজে জসীমউদ্দীন  নান্দনিক চৈতন্য  গ্রামকে শহরে এনেছি  গল্প- জলঝড়  একাত্তরের অপ্রকাশিত দিনপঞ্জি  রশীদ করীমে'র সাক্ষাৎকার- 'মনে পড়ে বন্ধুদের'  প্রাচ্যের ছহি খাবনামা  গল্প- এভাবেই ভুল হয়  গল্প- মাঠরঙ্গ  ফয়েজ আহমেদঃ স্মৃতিতে চিঠিতে  অরুন্ধতী রায়ের সাক্ষাৎকারঃ উপন্যাসের জগতের জগতের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই  ইতিহাস ও জাতি দিয়ে ঘেরা  গল্প- চাল ডাল লবণ ও তেল  ক-য়ে ক্রিকেট খ-য়ে খেলা  গল্পসল্প- ডাংগুলি  হ্যারল্ড পিন্টারের শেষ সাক্ষাৎকারঃ আশৈশব ক্রিকেটের ঘোর  সূচনার পিকাসো আর ভ্যান গঘ  আল্লাহআকবরিজ সি সি  গল্প- কবি কুদ্দুস ও কালনাগিনীর প্রেম  গল্পসল্প- আমার বইমেলা  বাংলাদেশ হতে পারে বহুত্ববাদের নির্মল উদাহরণ  শিক্ষানীতি ২০১০, পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি এবং জাতীয় স্বার্থ  নারী লাঞ্ছনার সর্বগ্রাস


দৈনিক প্রথম আলো এর সৌজন্যে
লেখকঃ শওকত চৌধুরী


এই গল্প'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.