মার্কিন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা নিয়ে সরকার ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এদিকে দাঙ্গা-বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ক্যামেরন এক মার্কিন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়ায় সরকার ও পুলিশ বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
গত সপ্তাহে লন্ডনসহ আশপাশের কয়েকটি শহরে টানা চার রাত ধরে দাঙ্গা-বিশৃঙ্খলা ও লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় দাঙ্গাবাজদের হামলায় নিহত হয় পাঁচ ব্যক্তি। এর মধ্যে তিনজনের হত্যার ঘটনায় আটক দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে রোববার আদালতে হাজির করার কথা ছিল।
গত সপ্তাহের ঘটনাকে ব্রিটিশ ইতিহাসের অন্যতম সন্ধিক্ষণ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন। তিনি বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ নয়, স্রেফ লুটতরাজের জন্য এক শ্রেণীর সুযোগসন্ধানী মানুষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আর দাঙ্গা দমনের প্রথম দিকে পুলিশ যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন ক্যামেরন।
পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ঘটনা যাতে রোধ করা যায় এবং ঘটলেও কার্যকরভাবে তা মোকাবিলা করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য রাজপথের অপরাধ দমনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম ব্রাট্টনকে নিয়োগ দিয়েছেন ক্যামেরন। ব্রাট্টন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস ও বোস্টন শহরের পুলিশপ্রধান ছিলেন। এ সময় দাঙ্গা ও রাজপথের সন্ত্রাস দমনে সফলতার জন্য তাঁর সুনাম আছে। বর্তমানে তিনি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা ক্রোলের চেয়ারম্যান।
তবে মার্কিন বিশেষজ্ঞ ভাড়া করে আনার ক্যামেরনের উদ্যোগকে ভালোভাবে নেয়নি ব্রিটেনের পুলিশ। পুলিশ বিভাগ এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এমনিতে পুলিশের সদস্যসংখ্যা হ্রাস এবং ব্যয় কাটছাঁটের পরিকল্পনা নিয়ে ক্যামেরন সরকার ও দেশের পুলিশ বিভাগের মধ্যে অসন্তোষ ছিল।
অ্যাসোসিয়েশন অব পুলিশ চিফ অফিসার্সের প্রধান সার হুগ অর্ডি বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, যুক্তরাষ্ট্রের একজন পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে আমাকেও দাঙ্গাবাজদের মোকাবিলার কৌশল শিখতে হবে কি না।’
নর্দান আয়ারল্যান্ড পুলিশের সাবেক কমান্ডার এবং লন্ডন নগর পুলিশের ডেপুটি কমান্ডার হুগ অর্ডি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্তরাজের্য সমাজ এক নয়। সহিংসতার ধরনও আলাদা। কাজেই এ বিষয়ে মার্কিন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে আদৌ কিছু শেখার আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের এই শীর্ষ কর্তাব্যক্তি।

No comments

Powered by Blogger.