যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র তুষারপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত

যুক্তরাষ্ট্রে গত শনিবার শুরু হওয়া তীব্র তুষারপাতে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাতিল করা হয়েছে বিমানের দুই হাজারের বেশি ফ্লাইট। ছয়টি অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। অনেক রেল ও সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নিউইয়র্ক ও নিউজার্সির গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোয় বিমান ওঠানামা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সেখানে আটকা পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী।
রোববার সারা দিন নিউইয়র্কে তুষার ঝরে। সন্ধ্যার পর নিউজার্সি ও আশপাশের এলাকাগুলোয় ১৮ ইঞ্চি পুরু তুষার জমে। ম্যাসাচুসেটস, মেইন, মেরিল্যান্ড, নিউজার্সি, উত্তর ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য জর্জিয়া ও দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় গত এক শতাব্দীর মধ্যে এবারই প্রথম তুষারে ঢাকা ‘শুভ্র বড়দিন’ উদ্যাপিত হয়েছে।
তুষারপাতের কারণে নিউইয়র্কের বিমানবন্দরগুলো রোববার রাত থেকে আট ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। জন এফ কেনেডি, লালার্ডিয়া ও ন্যুয়ার্ক লিয়াটি বিমানবন্দরের রানওয়ে পুরু তুষারে ঢাকা পড়ায় এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এতে বিমানবন্দরগুলোয় হাজার হাজার যাত্রী আটকা পড়ে। স্থগিত ফ্লাইটগুলো চালু হওয়ার সময়সূচি তাৎক্ষণিকভাবে জানতে না পেরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ে।
নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতে রেল ও বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিউ ইংল্যান্ড থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত এক দিনে অনেক সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সড়কে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার গাড়ি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তুষারপাতের শুরুতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকনগুলোয় ছিল উপচে পড়া ভিড়। জমে থাকা তুষারের স্তূপ সরিয়ে সড়কগুলো যান চলাচলের উপযোগী করতে কমপক্ষে চার দিন লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বোস্টন, রোড আইল্যান্ডসহ অন্যান্য নগরের মেয়ররা নগরকেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছেন।
নিউইয়র্ক নগরের কেন্দ্রস্থল ম্যানহাটনে খুব ঝুঁকির মধ্যেও গাড়ি চালাচ্ছেন বেশ কিছু চালক। রোববার মধ্যরাতে ম্যানহাটন থেকে বাংলাদেশি ক্যাবচালক শাহরিয়ার ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কমপক্ষে ৫০০ বাংলাদেশি ক্যাবচালক রাতের শিফটে কাজ করছেন। ফাঁকা সড়কে তুষারের স্তূপ। এর মধ্যে গাড়ি চালানো খুব কঠিন। বাড়তি আয়ের জন্য তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছেন।

No comments

Powered by Blogger.