কিউবায় বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ আরোহীর সবাই নিহত

কিউবায় গত বৃহস্পতিবার একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৬৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৬১ জন যাত্রী ও সাতজন ক্রু। এর মধ্যে ৪০ জন কিউবার ও অন্য ২৮ জন বিদেশি নাগরিক। রাজধানী হাভানা থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সান্তি স্পিরিতাস প্রদেশের পাহাড়ঘেরা গুয়াসিমাল গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।
কিউবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত সিভিল অ্যারোনটিকস ইনস্টিটিউটের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা অ্যারো ক্যারিবিয়ানের ফ্লাইট ৮৮৩-এর বিমানটি হাইতির রাজধানী পোর্ট অ প্রিন্স থেকে রওনা হয়। কিউবার পূর্বাঞ্চলীয় শহর সান্তিয়াগো দি কিউবায় যাত্রাবিরতি শেষে সেখান থেকে এটি হাভানার পথে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার আগে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা ৪২ মিনিটে বৈমানিক জরুরি বার্তা পাঠান। কিছুক্ষণের মধ্যে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ২৮ জন বিদেশি যাত্রীর মধ্যে নয়জন আর্জেন্টিনা, সাতজন মেক্সিকো, তিনজন ডেনমার্ক, দুজন জার্মানি ও দুজন অস্ট্রিয়ার নাগরিক। এ ছাড়া ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, ভেনেজুয়েলা ও জাপানের একজন করে নাগরিক। যাত্রীরা প্রায় সবাই পর্যটনের উদ্দেশে হাভানা যাচ্ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলেন, বিমানটি ভূপাতিত হওয়ার পর বিস্ফোরিত হয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর দূর থেকে তিনি পাহাড়ের ওপর আগুনের কুণ্ডলী দেখতে পান। বিমানটি গাছগাছালিতে ভরা একটি জংলা এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বুলডোজার ব্যবহার করতে হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসাবশেষ থেকে যাত্রী ও ক্রুদের লাশ উদ্ধার করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেন, দুর্ঘটনার নেপথ্যে খারাপ আবহাওয়া না অন্য কিছু রয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে গত বৃহস্পতিবার সান্তিয়াগো দি কিউবায় মৌসুমি ঝড় ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশ গুয়ানতানামোয় হারিকেনের পূর্বাভাস দিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে কিউবার পূর্বাঞ্চলে মাঝারি ধরনের ঝড় হয়। ওই দিন কিউবান এয়ারলাইনস নামের আরেকটি রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সান্তিয়াগো দি কিউবা ও গুয়ানতানামোয় তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করে। অনেকে মনে করছেন, বিরূপ আবহাওয়ার জন্য এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কিউবায় গত ২১ বছরে এটাই সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ ২০০২ সালের মার্চে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়।

No comments

Powered by Blogger.