লাগাম দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে

আগের দিন সকালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, কাল সকালেই আবার নিয়ে নিল নিয়ন্ত্রণ। বোলারদের সৌজন্যে পাওয়া সুযোগটা পাকিস্তান হেলায় হারিয়েছে ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যর্থতায়। তৃতীয় দিন শেষে ২৭১ রানে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা, এখনো অক্ষত ৮ উইকেট। জয় দূর অস্ত, প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তেও এখন অসাধারণ কিছু করতে হবে পাকিস্তানকে।
দ্বিতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছিল ৭৩ রানে। কাল তারাই পাকিস্তানের শেষ ৭ উইকেট তুলে নিল মাত্র ৫২ রানে। নিয়ন্ত্রিত অফ স্পিনে পাকিস্তানের মিডল-অর্ডারে ধস নামান ইয়োহান বোথা, দুরন্ত গতি আর বাউন্সে লেজটা মুড়ে দিয়েছেন মরনে মরকেল আর গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নিয়েছেন হাশিম আমলা। আমলার নাম শুনে চমকে গেছেন? এমনিতে হাত ঘোরানোর অভ্যাস তাঁর খুব বেশি নেই। কালও বোলিং করেননি। কিন্তু শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে যে দুটি ক্যাচ নিয়েছেন, উইকেট দুটো আমলাকে দিয়ে দিলে হয়তো বোলাররাও খুব একটা আপত্তি করবেন না।
সকালে কোনো উইকেট না পেলেও স্বস্তিতে থাকতে দেননি ইউনুস-আজহারকে। দুজনের প্রথম ৮ ওভার থেকে তাই রান এসেছে ১৬। এই চাপটাকেই দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন বোথা। সঙ্গে ছিল গ্রায়েম স্মিথের দুর্দান্ত ফিল্ডিং সাজানো। রানের জন্য হাঁসফাঁস করতে করতেই উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আলতো চিপে ডি ভিলিয়ার্সকে ক্যাচ দেন ইউনুস। অধিনায়কত্বের অভিষেক ইনিংসে মিসবাহ হলেন আমলার দুর্দান্ত এক ক্যাচ। উমর আকমল উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই মনে হচ্ছিল যেন তাঁর খুব তাড়াহুড়ো। লাঞ্চের মাত্র ১৫ মিনিট আগে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বোথাকে এমনভাবে হাঁকাতে চাইলেন যেন দুবাই থেকে বল পাঠিয়ে দেবেন আবুধাবি। ফলাফল—বল উঠল শূন্যে। ধারাভাষ্যকক্ষে বসে পমি বাংওয়া বললেন, ‘মস্তিষ্ক বিস্ফোরণ!’
এরপর যা হওয়ার কথা ছিল, হয়েছে তাই। দ্বিতীয় নতুন বলে জ্বলে উঠলেন মরকেল, ২৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো নিলেন ৫ উইকেট। নতুন বল নেওয়ার পর ১৩ ওভারে ৪০ রানে পড়েছে পাকিস্তানের শেষ ৫ উইকেট। আমলার চোখ ধাঁধানো ক্যাচের শিকার হয়েছেন এক পাশে ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে থাকা আজহার আলী। আবারও দক্ষিণ আফ্রিকা ভালো একটা সূচনা এনে দিয়েছেন স্মিথ-পিটারসেন। আর অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৩ রানের জুটিতে আমলা-ক্যালিস ইঙ্গিত দিয়েছেন স্কোরকে পাকিস্তানের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাওয়ার।

No comments

Powered by Blogger.