দু’মুঠো খাবারই এখন স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে গাজার মানুষের কাছে
সিএনএন জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান তথ্যের উপর ভিত্তি করে আইপিসির সতর্কতা প্রকাশ করে যে ব্যাপক অনাহার, অপুষ্টি এবং রোগ ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইপিসি বলেছে, ‘সংঘাত এবং স্থানচ্যুতি তীব্রতর হয়েছে। খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং পরিষেবার অ্যাক্সেস অভূতপূর্ব পর্যায়ে নেমে এসেছে।’
আইপিসি জানিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা ২০,০০০-এরও বেশি শিশুর চিকিৎসা করেছেন, যার মধ্যে ৩,০০০-এরও বেশি শিশু গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছিল। সর্বশেষ তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশে খাদ্য গ্রহণের জন্য এবং গাজা সিটিতে তীব্র অপুষ্টি দুর্ভিক্ষের সব সীমা অতিক্রম করা হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ‘তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ’ নেয়ার এবং বৃহৎ আকারের মানবিক সাহায্যের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে আইপিসির তরফ থেকে। মে মাসে, আইপিসি সতর্ক করে দিয়েছিল- গাজার প্রত্যেকেই ‘উচ্চ স্তরের তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ সম্মুখীন এবং দুর্ভিক্ষের ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এর জরুরি অবস্থা বিষয়ক পরিচালক রস স্মিথ বলেছেন, এটি স্পষ্টতই আমাদের চোখের সামনে, আমাদের টেলিভিশনের পর্দার সামনে একটি বিপর্যয় ঘটছে। এটি কোনও সতর্কতা নয়, এটি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৬০,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গাজায় ৪,৭০,০০০ এরও বেশি মানুষ, যার মধ্যে ৭১,০০০ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু রয়েছে, যারা এখন অনাহারে।
২রা মার্চ থেকে ইসরাইলের পূর্ণাঙ্গ অবরোধের ফলে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি এবং মানবিক সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করার সময় ১,০৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এই পরিস্থিতিকে ‘প্রকৃত দুর্ভিক্ষ’ বলে অভিহিত করেছেন। ইসরাইল ঘোষণা করেছে যে তারা গাজার কিছু অংশে প্রতিদিন ১০ ঘন্টা সামরিক অভিযান স্থগিত রাখবে যাতে ত্রাণ কনভয় নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে।
জাতিসংঘ বলছে, মানবিক চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ ট্রাক প্রয়োজন, যদিও নীতি পরিবর্তনের পর থেকে মাত্র ১০০টি ট্রাক প্রবেশ করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি

No comments