এবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া: গাজা দখলের পরিকল্পনা অবিলম্বে বাদ দিন -জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান
বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, এটি একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। এ জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের কোনো প্রয়োজন নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে আলবানিজ বলেন, তাঁর সরকার অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। সম্প্রতি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলে অস্ট্রেলিয়ার ওপরও চাপ বৃদ্ধি পায়।
অস্ট্রেলিয়া সরকার জানিয়েছে, স্বীকৃতির সঙ্গে কিছু শর্ত থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামাসকে গাজার নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ করা এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের সংস্কার।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন আলবানিজ।
ইতিমধ্যে ১৪০টির বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে শুধু চীন ও রাশিয়াই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য স্বীকৃতি দিলে বাকি থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ শুক্রবার ফলকার টুর্ক সতর্ক করে বলেন, এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে এবং আরও ব্যাপক ভোগান্তির জন্ম দেবে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের জারি করা এক বিবৃতিতে টুর্ক বলেন, এ পরিকল্পনা ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সেই রায়ের পরিপন্থী; যেখানে বলা হয়েছে ইসরায়েলকে যত দ্রুত সম্ভব দখলদারির অবসান ঘটাতে হবে।’
মানবাধিকারপ্রধান আরও বলেন, এ পদক্ষেপ ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ও ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারেরও পরিপন্থী।
টুর্ক বলেন, ‘এ পর্যন্ত পাওয়া সব প্রমাণ বলছে, এ নতুন উত্তেজনা আরও ব্যাপকভাবে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, আরও হত্যাযজ্ঞ, অসহনীয় কষ্ট, অযৌক্তিক ধ্বংসযজ্ঞ ও যুদ্ধাপরাধ ডেকে আনবে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজায় যুদ্ধ এখনই শেষ হতে হবে এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের ‘শান্তিতে পাশাপাশি বসবাসের সুযোগ দিতে হবে।
টুর্ক ইসরায়েল সরকারকে যুদ্ধ বাড়ানোর বদলে গাজায় মানবিক সহায়তার ‘পূর্ণ ও বাধাহীন প্রবাহ’ নিশ্চিত করে স্থানীয় জনগণের জীবন রক্ষায় মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে আটক সব জিম্মিকে ‘অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি’ দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলের হাতে অবৈধভাবে আটক ফিলিস্তিনিদেরও মুক্তির দাবি জানান জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় এই কর্মকর্তা।
ফলকার টুর্ক সতর্ক করে বলেন, ‘এ যুদ্ধ আরও তীব্র করার বদলে ইসরায়েল সরকারকে গাজার বেসামরিক মানুষের জীবন রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত। সংঘাত বাড়তে থাকলে তা শুধু ভোগান্তি ও ধ্বংসযজ্ঞ দীর্ঘায়িত করবে।’
![]() |
| অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। ছবি: এএফপি |

No comments