গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা সব জায়গায় লাশের গন্ধ
এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি গাজার মানবিক পরিস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, গাজায় চলমান সহিংসতার মধ্যে আটকে পড়া ফিলিস্তিনিদের সহায়তার জন্য জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
লাজারিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানান, ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মীরা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় খাদ্য, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় লাশের গন্ধ। রাস্তায় এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মরদেহ পড়ে আছে। এগুলো সরাতে কিংবা মানবিক সহায়তার কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হচ্ছে না।’ এ অবস্থার মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
‘যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হলে আমরা এ সংকটের বিপর্যয় ঠেকাতে পারব না।’ উল্লেখ করে লাজারিনি বিশেষ করে আশ্রয়প্রার্থীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য অন্তত কয়েক ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতির আহ্বান করেন।
এদিকে গাজার পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ অঞ্চলে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে দখলদার বাহিনী হামলা চালায়নি। গাজার স্কুল, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন ও মসজিদ সবকিছু ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ৪৮৭ জন আহত হয়েছে। এ সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ সংঘাতের তীব্রতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা সতর্ক করেছেন, গাজার মানুষের মৌলিক মানবাধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।
কিছু মানবিক সংস্থা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা গাজার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখে এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য সহায়তা প্রদানের পথ খুঁজে বের করে।
লাজারিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি কীভাবে এ সংকট মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমাদের জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা দিতে হবে এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে।’ এ বিপর্যয়ের মোকাবিলায় মানবতার জন্য এক ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
গাজার এ করুণ পরিস্থিতি বিশ্ববাসীকে একটি মানবিক সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করেন তিনি বলেন, ‘এখনই সময়, আমাদের মানবতার জন্য একত্রিত হতে হবে এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের দিকে নজর দিতে হবে।’
সূত্র : আল জাজিরা
No comments