শিগগিরই খুলে দেয়া হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে by কাজী সোহাগ

আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই খুলে দেয়া হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড  এক্সপ্রেসওয়ে। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় বনানী ও মহাখালীর গুরুত্বপূর্ণ দু’টি টোলপ্লাজা আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার পর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, আন্দোলনে দু’টি টোলঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই দু’টি টোলঘর বাদ দিয়ে ম্যানুয়ালি পদ্ধতি ব্যবহার করে চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সবমিলিয়ে আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করা হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিক্ষোভ ও সংঘাতে গত ১৮ই জুলাই রাতে বনানী ও ১৯শে জুলাই বিকালে মহাখালী টোলঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এতে আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড। গত ১৮ই জুলাই রাত পৌনে ৮টায় শত শত লোক বনানী টোলঘরে হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একদল শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) খুলে নিয়ে যায়। কেউ কম্পিউটার, ক্যামেরা নিয়ে যায়। আরেক দল আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে টোল বুথ, ছাউনি, সিস্টেম সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আর ১৯শে জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মহাখালী টোলঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। দু’টি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তবে আগুনে পুড়ে যাওয়া বনানী টোলঘরের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ঠিক না করা পর্যন্ত অন্তত হাতে হাতে টোল নিয়ে (ম্যানুয়ালি) চালু করা যায় কিনা, সেটাও ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। প্রথমে কারফিউ পুরোপুরি না ওঠা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার জন্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা চায় প্রতিষ্ঠান।

এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকায় উত্তরা এয়ারপোর্ট থেকে এফডিসি সিগন্যাল এবং ফার্মগেট হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারীদের জন্য এখন হাতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা বেশি সময় নিয়ে বের হতে হচ্ছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকায় উত্তরা-কুড়িল-বাড্ডা-রামপুরা-মৌচাক-পল্টন এবং উত্তরা-বনানী-মহাখালী-গুলশান-ফার্মগেট-আগারগাঁও সড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হচ্ছে। ফলে এসব সড়কের যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সামনে থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এ উড়াল সড়ক। পুরো উড়াল সড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। হাতিরঝিল সংলগ্ন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২০২৩ সালের ২রা সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে যান চলাচল উদ্বোধন করেন। পরদিন ৩রা সেপ্টেম্বর থেকেই এতে যান চলাচল শুরু হয়। এরপর চলতি বছরের ২০শে মার্চ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এফডিসি র‌্যাম্প খুলে দেয়া হয়। এটি একটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প যার প্রাক্কলিত ব্যয় ৮৯.৪০০ বিলিয়ন টাকা। এই প্রকল্পের ৭৩ ভাগ ব্যয় বহন করছে ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি এবং ২৭ ভাগ ব্যয় বহন করছে বাংলাদেশ সরকার।

No comments

Powered by Blogger.