ভয় পেয়ো না মা... :ছুটির দিনেও ঢাকা কোর্টে স্বজনদের খোঁজে ভিড় by রাশিম মোল্লা

ছুটির দিনেও স্বজনদের খোঁজে ঢাকার বিচারিক আদালতে উপচেপড়া ভিড়। বৃষ্টির মধ্যেই আটক স্বজন আছে কিনা তা দেখার জন্য কখনো ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) গারদখানার সামনে, আবার কখনো ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা গেছে স্বজনদের। রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশ ভ্যান আসামাত্র ঘিরে ধরছে স্বজনরা। কেউ কেউ নাম ধরে ডাকাডাকি করছেন। কেউ সাড়া পাচ্ছেন, আবার কেউ সাড়া পাচ্ছেন না। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনেও ঢাকা কোর্টের সামনে এমন চিত্র দেখা গেছে। জামিন না পাওয়ায়  বেশ কয়েকজন স্বজনকে প্রিজন ভ্যানের পিছনে পিছনে ছুটতে দেখা যায়। সরজমিন দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে আটককৃত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আটককৃতদের রিমান্ড মঞ্জুর ছাড়া সব আসামিকেই কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। প্রিজন ভ্যান থেকে আটক একজন স্বজনকে বলতে শোনা যায়, ভয় পেয়ে না মা। খুব শিগগিরই জয়ী হবো। জেল-জুলুম করে আমাদের দমন করা যাবে না। দোয়া করো আন্দোলনকারী তোমার অন্য ছেলেদের জন্য। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দোতলায় দেখা যায়, রামপুরা থেকে আসা রেহানা বেগম নামে এক মা সন্তানের জন্য কান্না করছেন।

মায়ের সঙ্গে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষার্থী হাবিবাও এসেছেন ভাইকে দেখার জন্য। রেহানা বেগম জানান, পরশু রাতে রামপুরা থেকে আমার সন্তানকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে আমার ছেলের মোবাইলে আন্দোলনের ছবি আর ভিডিও পাইছে। পাশে দাঁড়িয়ে আরেক স্বজন জানান, বৃহস্পতিবার মিরপুর থেকে পুলিশ তার ভাইকে আটক করেছে। তার ভাই মূলত বাইক চালান। এদিকে, গতকাল সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বনানী থানায় দায়ের করা পুলিশের মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে দুই দফায় ৮ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে দেখতে ছোটভাই ও বেশকিছু নেতাকর্মীদেরও দেখা যায়। আদালতের শুনানিতে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পার্থকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

অপরদিকে আসামি পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন তার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান ওরফে শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুসহ ৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ২৯শে জুলাই ৪ এবং ২৫শে জুলাই ৪ দিনের রিমান্ডে ছিলেন তারা। গতকাল রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

No comments

Powered by Blogger.