সরকারের দমন-পীড়নে ছাত্র আন্দোলন রূপ নিচ্ছে গণঅভ্যুত্থানে -সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের কলাম
কলামে আরও বলা হয়েছে, চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা এখন জনতার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে। গত একমাস এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি চলছে বাংলাদেশে। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ, সেনাবাহিনী, আধাসামরিক এবং সরকারপন্থি ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের হামলার ফলে দেশটিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তথ্যানুযায়ী সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৬৬ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওকে উদ্ধৃত করে আজিজুর লিখেছেন, আহত এক যুবককে উদ্ধার করতে যখন আরেক যুবক টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন এক পুলিশ সদস্যকে পর পর তিনটি গুলি করতে দেখা গেছে। এই ঘটনা রাজধানীর শনির আখড়া এলাকার বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এমন হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত থেকে উত্তপ্ততর হয়ে উঠেছে।
আন্দোলনকারী কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা এখন আটককৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী এবং দেশটির সাধারণ জনতা। শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছে। এ সব দাবির মধ্যেও দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের প্রশাসন। চলছে গ্রেপ্তারও। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিল্পী সমাজ, আইনজীবী এবং সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকরা। বলা বাহুল্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এখন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছে। ২০০৯ সালের পর থেকে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদল তার অধীনে অনুষ্ঠিত সবগুলো নির্বাচন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ করেছেন। ভিন্নমত দমনেও শেখ হাসিনার সরকার দমন-পীড়ন নীতি অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এছাড়া তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে। উদ্ভূত এসব সংকট এবং সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা।
-সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত।
No comments