কচুরি-শিঙাড়া বেচে কোটিপতি, তারপর...

১২ বছর ধরে একই কাজ করে যাচ্ছেন মুকেশ কুমার। ছোট্ট দোকানে সকাল-সন্ধ্যা কচুরি, শিঙ্গাড়া, সমুচা ভাজেন আর বেচেন মুকেশ। সেই মুকেশের দোকানে হানা দিয়েছে ভারতের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা। এরপর তো তাঁদের অবাক হওয়ার পালা। কারণ, প্রতিদিন কচুরি বেচেই মুকেশ বছরে ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি রুপি আয় করেন! কচুরি বেচেই যে কোটিপতি বনে গেছেন মুকেশ, তা বুঝতেই পারেননি এলাকাবাসীও।
ইন্ডিয়া টুডে ও এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে বাড়ি মুকেশ কুমারের। সেখানেই ‘সীমা টকিজ’ সিনেমা হলের পাশে মুকেশের কচুরির সেই দোকান। সকাল সকাল কর্মচারীদের সঙ্গে কাজে নেমে পড়েন মুকেশ নিজেও। ময়দা মাখা, তরকারির আলু কাটা, কড়াইয়ে তেল ঢালা—সবই করেন নিজে হাতে। এরপর গরম তেলে কচুরি-সমুচা ভেজে তুলে দেন ক্রেতাদের পাতে। সস্তায় ভালো কচুরির জন্য মুকেশের দোকানের সুনাম আছে। সেই ‘মুকেশ কচুরি’তে হঠাৎ হাজির রাজ্যর আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা।
১২ বছর ধরে পুরি (কচুরি) বিক্রি করে আসছেন ভারতের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বছরে ৬০ লাখ রুপির বেশি আয় তাঁর। ছবি: সংগৃহীত
আয়কর দপ্তরের বিশেষ অনুসন্ধান শাখার কর্মকর্তারা আলিগড়ের ব্যবসায়ীদের আয়কর এবং পণ্য ও সেবা করের (জিএসটি) ব্যাপারে খোঁজখবর চালাচ্ছিলেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন মুকেশের পুরির দোকানের কথা। তাঁরা জানতে পারেন, কোনো আয়কর দেন না মুকেশ। এমনকি নেই জিএসটি রেজিস্ট্রেশনও। এরপর বেশ কয়েক দিন মুকেশের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে সারা দিনের বিক্রিবাট্টার হিসাব নেন তাঁরা। কয়েক দিনের আয় দেখে আয়কর কর্মকর্তারা সারা বছরের বিক্রিবাট্টার একটা সম্ভাব্য হিসেব দাঁড় করান। এতে দেখা যায়, কচুরি বিক্রি করেই বছরে ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি রুপি আয় করেন মুকেশ।
এরপরই নড়েচড়ে বসেন আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। তড়িঘড়ি নোটিশ পাঠানো হয় মুকেশের কাছে। তবে আয়কর কর্মকর্তাদের কাছে নিজের সাফাই দিয়েছেন মুকেশ। আয়কর না দেওয়া প্রসঙ্গে মুকেশ বলেন, ‘কচুরি-শিঙাড়া বেচেই আমার দিন চলে। এসব নিয়মের কথা কেউ কখনো বলেনি আমায়। আমি ১২ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছি। সহজ-সরল মানুষ আমি। অত জটিল ব্যাপার বুঝি না।’
একজন আয়কর কর্মকর্তা বলেন, মুকেশ তাঁর আয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, মুকেশ সরকারকে এক বছরের আয়কর দিয়েছেন।
মুকেশ জিএসটি নিবন্ধন করেছেন। আর আয়ের জন্য গত এক বছরের করও দিয়েছেন।
বছরে কোনো ব্যবসায়ী বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর আয় ৪০ লাখ রুপির বেশি হলে সরকারকে জিএসটি দিতে হবে। আর খাদ্যপণ্যের ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
মুকেশ কুমারের দোকানটি ছোট্ট হলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বিক্রিবাট্টা ভালো। ছবি: এএনআই

No comments

Powered by Blogger.