রাশিয়ায় বিমান তৈরির কারখানা পরিদর্শন করলেন মিয়ানমারের সামরিক প্রধান by মো মিয়ন্ত

রাশিয়ার ইরকুৎস্ক অ্যাভিয়েশান প্ল্যান্ট কর্পোরেশান পরিদর্শনকালে সেখানে একটি এমসি-২১ বিমানের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং। সেখানে তিনি বিমান চালানোর প্রয়োজনীয় শর্তাদি সম্পর্কে অবগত হন এবং পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পর্যবেক্ষণ করেন। সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সেনাবাহিনী প্রধানের অফিস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতির সাথে তিনটি ছবিও প্রচার করা হয়েছে, যেগুলোতে দেখা যাচ্ছে সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং ইরকুৎস্ক কোম্পানির এক পরীক্ষামূলক পাইলটের সাথে ককপিটে বসে আছেন। সিনিয়র জেনারেল পাইলটকে এমসি-২১ উড়ানোর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন এবং বিমানের সংস্থাপন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান।

গত ১৮ আগস্ট ইন্টারন্যাশনাল আর্মি গেমসের সমাপতি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে রাশিয়া যান মিন অং লাইং। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল সের্গেই কুঝুগেতোভিচ শোইগুর সাথে তিনি বৈঠক করেন। তবে এ ব্যাপারে বিশদ আর কিছু বলা হয়নি।

ইরকুৎস্ক সেই কোম্পানি যেখানে মিয়ানমারের জন্য ছয়টি সুখোই সু-৩০ বহুমুখী জঙ্গি বিমান তৈরি হচ্ছে। গত বছর দুই দেশের মধ্যে ২০৪ মিলিয়ন ডলারের ওই চুক্তি হয়। জোড়া ইঞ্জিনের এই জঙ্গি বিমানের বাজার মূল্য হলো ৩৪ মিলিয়ন ডলার।

এটা স্পষ্ট নয় যে জঙ্গি বিমান তৈরির অগ্রগতি নিয়ে রাশিয়ার মন্ত্রীর সাথে মিন অন লাইং কথা বলেছেন কি না। অথবা ভবিষ্যতে অন্য কোন অস্ত্র চুক্তি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে কি না। গত এপ্রিলের ইরকুৎস্ক কারখানা সফরকালে সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামাদি মিয়ানমারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্যবহারের জন্য খুবই উপযোগী।

সিনিয়র  জেনারেলের রাশিয়া সফর ঘিরে সবসময়ই জল্পনা হয়ে থাকে যে, সফরে কোন অস্ত্র চুক্তি হয়ে থাকতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে তিনি ইরকুৎস্ক অ্যাভিয়েশান প্ল্যান্ট সফর করায় এই প্রশ্ন উঠেছে যে, তিনি মিয়ানমারের সামরিক পরিবহন সক্ষমতা আপগ্রেড করার পরিকল্পনা করছেন, না কি শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য তিনি ভিআইপি বিমান কেনার পরিকল্পনা করছেন।

সামরিক পর্যবেক্ষক এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তা থাইনিনগা ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের কো নাইং সুয়ে উ বলেন যে, রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক এমসি-২১ নেয়া হচ্ছে, কিন্তু এর বিক্রয় মূল্য মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর জন্য এই মুহূর্তে অনেক বেশি। তিনি বলেন যে, কমান্ডার-ইন-চিফ হয়তো শীর্ষ জাতীয় নেতাদের মতো ভিআইপিদের ব্যবহারের কথা ভেবে এমসি-২১ পরিদর্শন করেছেন। তবে তিনি এটাও বলেন যে, এমনও হতে পারে যে, রাশিয়া তাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা মিয়ানমারকে তাদের একটা পণ্য ঘুরিয়ে দেখিয়েছে মাত্র।

No comments

Powered by Blogger.