রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব মাহাথিরের

ড. মাহাথির মোহাম্মদ
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের নাগরিকত্ব প্রদান অথবা আলাদা রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ দিয়ে সংকটটির স্থায়ী সমাধান করা উচিত বলে মনে করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সাধারণত অন্য দেশের অর্ভন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে এ ক্ষেত্রে গণহত্যার বিষয় জড়িত। মালয়েশিয়া গণহত্যা এবং মিয়ানমারের নাগরিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার এক সময় অনেকগুলো আলাদা রাজ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশরা মিয়ানমারকে এক রাষ্ট্র হিসেবে শাসন করার সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে অনেক জাতিগোষ্ঠী বার্মা নামক রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু এখন অবশ্যই তাদের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করতে হবে অথবা নিজেদের রাষ্ট্র গঠনের জন্য তাদের আলাদা অঞ্চল ছেড়ে দেয়া উচিত।

তাই রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করলে মিয়ানমারে তাদের আলাদা রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ দেয়া উচিত।

তুরস্ক সফররত মাহাথির দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদলু এজেন্সিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান শুরু করলে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশ গিয়ে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণধর্ষণ ও গণহত্যা চালিয়েছে বলে জাতিসংঘ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রাদ আল-হাসান এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনের বাস্তব বা পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

রোহিঙ্গা মুসলমানদের সংকট সমাধানে মিয়ানমার প্রশাসনের ওপর আন্তর্জাতিক চাপপ্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে আসছে মালয়েশিয়া। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ রাখাইন রাজ্যে গিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

এমন প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মালয়েশিয়ার অবস্থান জানতে চাওয়া হলে মাহাথির বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মিয়ানমারের গণহত্যায় তারা চুপ থাকতে পারেন না।

একই সাক্ষাৎকারে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করে ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে অবৈধভাবে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।

মাহাথির বলেন, এখন বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের জন্য মুসলমানদের দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড দখলের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পরিপ্রেক্ষিতে যে সব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যা দুর্ভাগ্যজনক।

No comments

Powered by Blogger.