ভয়ঙ্কর খুনি লবুর হরর কাহিনী

লিটন কুমার ঘোষ (৪৫)কে হত্যার কারণ খুঁজছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দুপুরে কুপিয়ে লিটনের মাথা দেহ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে সেই কাটা মাথা ব্যাগে নিয়ে থানায় হাজির হয় খুনি লবু লাল দাস ওরফে নবকৃষ্ণ দাস (৪৮)। এরপর পুলিশ তাকে আটক করে। লবুকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। পরে জেল হাজতে পাঠানো হয় তাকে। লোমহর্ষক এ ঘটনা ঘটে নাসিরনগর সদরের গৌর মন্দিরে। লিটনকে হত্যার ঘটনায় তার ভাই স্বপন চন্দ্র ঘোষ থানায় একটি মামলা দিয়েছেন। এতে আক্রোশমূলক তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
লবু এর আগেও তার আপন চাচাকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত লিটনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে। তার পিতার নাম মতি লাল ঘোষ। আর খুনি লবু নাসিরনগর পশ্চিমপাড়ার পরমানন্দ দাসের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়- লিটন এখানে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। ঘটনার দিন পৌনে ২টার দিকে গৌর মন্দিরের ভেতর নাট মন্দির মঞ্চে শুয়েছিল সে। ওই সময় লবু লাল দাস সেখানে পৌঁছে শয়নে থাকা লিটন কুমার ঘোষকে অতর্কিত ধারালো দা দিয়ে সজোরে গলায় কোপ দেয়। এতে দেহ থেকে মাথা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় লিটনের। এরপর লবু তার সঙ্গে থাকা বাজারের ব্যাগে কাটা মাথা ভরে হাতে দা নিয়ে থানায় হাজির হয়। থানায় গেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক তাকে আটক করে। পাশাপাশি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং গৌর মন্দিরের ভেতর নাট মন্দির মঞ্চের মেঝেতে লিটনের মাথা বিচ্ছিন্ন রক্তাক্ত মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখে। থানা থেকে অনুমান ৩০০ গজ উত্তর-পূর্ব দিকে গৌর মন্দিরের অবস্থান। পুলিশ জানায়- থানার রেকর্ড পত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, লবুর বিরুদ্ধে ২০১২ নাসিরনগর সদরের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মতিলাল দাসকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। মতি লবুর চাচা। এ ঘটনায় নাসিরনগর থানায় ২০১২ সালের ১৫ই জানুয়ারি হত্যা মামলা হয় (নং-২৪) তার বিরুদ্ধে। পুলিশ  তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০শে মে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালত মামলাটির বিচার শেষে এ বছরের ১৮ই মার্চ লবুকে বেকসুর খালাস দেয়।
গৌর মন্দিরের পূজারি নকুলানন্দ দাস জানান, নিহত লিটন ঘোষ প্রায়ই মন্দিরের নাট ঘরের ভেতরে ঘুমাত। মাঝে মধ্যে লবু দাসও আসত সেখানে। মঙ্গলবার দুপুরে আমি পূজার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। পূজা শেষ করে পেছন ফিরেই দেখতে পাই লবু বস্তায় করে কি যেন নিয়ে যাচ্ছে। এবং বস্তা থেকে রক্ত ঝরছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার দিতেই সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কবির হোসেন জানান- গৌর মন্দিরের পাশেই লিটনের বোনের বাড়ি। সেখানে দু-দিন আগে এসেছিল সে। খাওয়া-ধাওয়া করে মন্দিরে গিয়ে শুয়েছিল। এরপরই লবু সেখানে গিয়ে তাকে হত্যা করে। তবে কি কারণে লবু তাকে হত্যা করলো সেটি এখনো জানা যায়নি। লিটনের সঙ্গে লবুর কোনো উঠাবসা বা তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল কিনা সেগুলো আমরা তদন্ত করে দেখছি।

No comments

Powered by Blogger.