কি চমক দেখাবে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইশাল

বৃটেনে বিস্ময় সৃষ্টি করছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মাত্র ১২ বছর বয়সী ইশাল মাহমুদ। সেখানে টিভি শো ‘চাইল্ড জিনিয়াসে’ যে পাঁচজন প্রতিযোগী রয়েছে চূড়ান্ত পর্বে তার মধ্যে ইশাল অন্যতম। বাংলাদেশী ফরহাদ মাহমুদ (৪০) ও মা মমতাজের (৩৬) মেয়ে সে। তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সফলতার শিখরে নিয়ে গেছেন মামা এমরান হোসেন। ফলে টেলিভিশনে যখনই দেখানো হয় ইশাল মাহমুদকে তখনই কোটি মানুষ বিস্ময়ের চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।
এত্তটুকুন মেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে একের পর এক উত্তর দিয়ে যায়। যেমন তার বুদ্ধিমত্তা, তেমন চিন্তাশক্তি। আছে বিশাল ব্যতিক্রমী বুদ্ধি।
সব মিলিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে ইশাল। শনিবার দিবাগত রাতে ওই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব হওয়ার কথা। সেখানেই বাছাই হওয়ার কথা বৃটেনের সবচেয়ে ব্রাইট শিশু। তাই তাকে নিয়ে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল বিশাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে ইশাল এতটা পথ পাড়ি দিয়েছে। ইশাল বলেছে, সে অক্সফোর্ড অথবা কেমব্রিজে গণিত পড়ার পরে একজন জ্যোতির্বিদ হবে। তার পিতা একজন ট্যাক্সিচালক। সপ্তাহে ৮০ ঘন্টা কাজে থাকেন। মা মমতাজ জাতীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রকল্পে কাজ করেন। কিন্তু ইশালকে গড়ে তোলার কাজে মন দেন তার মামা এমরান হোসেন। ইশালের সামান্য অবসর সময় পেলেই তার মধ্যে তথ্য ঢুকাতে থাকেন তিনি। এমরান অক্সফোর্ডের গ্রাজুয়েট। তার কোনো ছেলেমেয়ে নেই। তাই তিনি প্রতিটি মুহূর্ত ভাগ্নি ইশালকে গড়ে তোলার কাজ করেন। স্কাইপ মাধ্যমে, সকালে নাস্তা খাওয়ার সময়, সব সময়ই তিনি লেগে থাকেন। তাকে দিয়ে টেলিভিশনে খবর দেখানো হয়। এমপিদের কাছে চিঠি লেখানো হয়। লেখানো হয় উপন্যাস।
ইশাল শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মধ্যেই থাকে নি। সে শিখেছে মেধা, শক্তি সহ সব পর্যায়ের জ্ঞান। বাজাতে পারে অর্গান। জুনিয়র স্কুলে পড়াকালে সে পোর্টসমাউথ ক্যাথেড্রালে প্রার্থনাসঙ্গীতে অংশ নিয়েছে। সম্ভবত বিশ্বে এমন প্রার্থনা সঙ্গীতে সেই একমাত্র অর্গানিস্ট এবং রয়েল স্কুল অব চার্চ মিউজিকের একজন সদস্য। অর্গান বাজানো বেছে নিয়েছে সে।
তাকে সহযোগিতা করেছেন যে মামা এমরান হোসেন তিনিও কম মেধাবী নন। তিনি নিজেও ছিলেন চাইল্ড জিনিয়াস। তার সংগ্রহে রয়েছে ২৬টি জিসিএসই। সবগুলোতে শীর্ষ গ্রেড পেয়েছেন। পূর্ব লন্ডনের একটি অবহেলিত এলাকা থেকে তিনি এ সফলতা অর্জন করেছিলেন। তার বোন মমতা বলেন, এরপরই এমরান ইটনে সুযোগ পায়। কিন্তু বাবা তাকে আমাদের বাসা ছেড়ে যেতে দিলেন না। ফলে সে আমাদের সঙ্গেই রয়ে গেছে। সরকারি স্কুলের শিক্ষা মিস করেছেন এমরান। কিন্তু তিনি এখনও অক্সফোর্ডে মেডিসিন পড়ার জন্য একটি বৃত্তি ধরে রেখেছেন। আর কাজ করছেন একটি স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্রে।
ইশালের পিতা ফরহাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশেই। পূর্ব লন্ডনে আট ভাইবোনের সঙ্গে বড় হয়েছেন মমতাজ। তার সঙ্গে ফরহাদের বিয়ে ঠিক হয়। সেই সূত্রে তিনি বৃটেনে যান। ওই সময় মমতাজের বয়স ছিল ১৮ বছর। তাদের বিয়ের পর জন্ম হয় ইশাল ও তার ভাই জিশান (১১)-এর।

No comments

Powered by Blogger.