ডাকসু নির্বাচন: সিন্ডিকেটের দিকে তাকিয়ে সবাই by মুনির হোসেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্তই অনুমোদন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সভায়। এখান থেকে চূড়ান্ত হবে- কারা হতে পারছেন ডাকসু নির্বাচনের ভোটার ও প্রার্থী, প্রার্থীদের আচরণবিধি কী হবে, গঠনতন্ত্রে কী কী সংশোধন আসছে, তফসিল ঘোষণা কবে হবে, সিসি ক্যামেরা
ব্যবহার করা যাবে কিনা, গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষক সংস্থার ভূমিকা কী হবে। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। সিন্ডিকেটের এক সদস্য সভার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে। আমাদের উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সভায় ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।’
এদিকে সিন্ডিকেটের এ সভা ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে। তারাও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে। বিশেষ করে গঠনতন্ত্র মোতাবেক যারা ইতিমধ্যে নির্বাচনে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন তারাও তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন সিন্ডিকেটের সভার প্রতি। ইতিপূর্বে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর সব দাবি দাওয়াই সিন্ডিকেটে তোলা হবে বলে জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, আগামী ১১ই মার্চ ডাকসু ও হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটা কমিটি গঠন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৫ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ, সাত সদস্যের আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটি, পাঁচ সদস্যের গঠনতন্ত্র যুগোপযোগীকরণ কমিটি। এসব কমিটি ইতিমধ্যে নিজেরা এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে গঠনতন্ত্র যুগোপযোগীকরণ, আচরণবিধি সংক্রান্ত বিভিন্ন সুপারিশ জমা দিয়েছেন ভিসির কাছে। কমিটির দেয়া সুপারিশগুলো তোলা হবে সিন্ডিকেটের সভায়। সেখান থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়াও ভিসি প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ছয় রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন। তারাও নির্বাচনকে সামনে রেখে ভিসির কাছে কিছু সুপারিশ রেখেছেন। সেগুলোও আলোচনায় আসবে সিন্ডিকেটের সভায়। চূড়ান্ত করা হতে পারে কখন ঘোষণা হচ্ছে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল। নির্বাচনের তারিখ, মনোনয়ন সংগ্রহ, জমা ও প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দিনক্ষণ।
প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের খসড়া যে আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছিল, সেখানে আমরা বেশকিছু ধারায় সংশোধনের দাবি জানিয়েছি। এখন দেখা যাক সিন্ডিকেট কী সিদ্ধান্ত নেয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা আচরণবিধিতে মাইক ব্যবহারে শর্ত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ অল্প কিছু ধারায় পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছি। এছাড়া গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির কাছে প্রার্থী শর্ত শিথিলের প্রস্তাব করেছিলাম। এখন সিন্ডিকেট কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি। তবে আমরা সিন্ডিকেটের নেয়া যেকোনো সিদ্ধান্তের আলোকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
গঠতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করার পর তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্রে কিছু পরিবর্তন এনে মাননীয় ভিসি স্যারের কাছে দিয়েছি। সিন্ডিকেট সেগুলো দেখে পরিবর্তন পরিবর্ধন করে চূড়ান্ত করবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো সিদ্ধান্তের বিষয় রয়েছে যেগুলো সিন্ডিকেট চূড়ান্ত করবে। আজ সিন্ডিকেটের সভা অনুষ্ঠিত হবে।’
আচরণ বিধিতে কী চায় ছাত্র সংগঠনগুলো
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটি একটি খসড়া আচরণবিধি তৈরি গত শুক্রবার ছাত্র সংগঠনগুলোকে পৌঁছে দিয়েছিল। যেখানে ১৪টি ধারায় করা খসড়া আচরণবিধি ছাত্র সংগঠনগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে যুক্তিসঙ্গত হলে প্রয়োজনে সংশোধন করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর শনিবার ছাত্র সংগঠনগুলো আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটিকে নিজেদের মতামত দেয়।
ছাত্রলীগের সুপারিশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যায়তনিক পরিবেশ, একাডেমিক কার্যক্রম, ক্লাস-পরীক্ষা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-লাইব্রেরির পরিবেশ ব্যাহত করে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না; ৫ (জ) সংশোধন করে শিক্ষার পরিবেশ ও স্বাভাবিক ক্যাম্পাস জীবনের স্বার্থে মাইকের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। ছাত্র সমাবেশ বা অডিটোরিয়ামের অভ্যন্তরে মাইকের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে; দেয়াল লিখনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন-সাহস-সংগ্রাম প্রতিধ্বনিত হয়। ছাত্ররাজনীতির ঐতিহ্যবাহী এ প্রথার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে না;  মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির স্বার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে ও হলগুলোতে নির্বাচনী বিতর্কসভার আয়োজন করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ নির্বাচন একান্তই একাডেমিক-বুদ্ধিবৃত্তিক-সাংস্কৃতিক ও ছাত্র-অধিকারকেন্দ্রিক। নির্বাচনের মিথস্ক্রিয়া ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। বর্তমান ছাত্র নেতা ছাড়া ডাকসু বা হল সংসদের সাবেক নেতৃবৃন্দ বা অন্য কাউকেই রাজনৈতিক প্রচারণায় সম্পৃক্ত করা যাবে না। ক্যাম্পাসের রাজনীতি ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই পরিচালিত হতে হবে; আচরণবিধি সাপেক্ষে, সাংবাদিকদের কার্যক্রম পরিচালনা করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে; ৫ (খ) সংশোধন করে সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করার অনুমতি ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টা করতে হবে; কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধির কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে, সংক্ষুব্ধ যে কেউ চিফ রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারবে। সেক্ষেত্রে তদন্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে; নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় বা অঞ্চলকে ব্যবহার বা অপব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না; শিক্ষার্থীদের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্বাচনী ব্যয়সীমা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
ছাত্রদলের সুপারিশ
ছাত্রদল তফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের কোনো প্রকার হয়রানি, মামলা দেয়া এবং গ্রেপ্তার না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়াও সংগঠনটির পক্ষ থেকে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা সংক্রান্ত ৪(গ) ধারা সংশোধন করে পরিবেশ পরিষদের সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সকল নেতৃবৃন্দকে নিজ নিজ সংগঠনের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা ও প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে সাবেক ডাকসু নেতৃবৃন্দের উপস্থিত থাকার সুযোগ দেয়ার দাবি জানানো হয়। ছাত্রদলের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে- ভোট প্রদানের গোপন বুথ ব্যতীত ভোটকক্ষ এবং সমগ্র ভোটকেন্দ্র ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা। নির্বাচনী সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা সংক্রান্ত ৫(খ) ধারা সংশোধন করে প্রচার-প্রচারণাকে আরো প্রাণবন্ত ও স্বতঃস্ফূর্ত করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার পূর্বে সভা সমাবেশ ও শোভাযাত্রা করার অনুমতি গ্রহণের সময়সীমা শিথিল করা। উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান এবং উচ্ছৃঙ্খল আচরণ নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যাতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে অথবা করলে তাদেরকে সহজেই শনাক্ত করা যায়। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত ১০(ক) ধারায় বলা হয়েছে রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ‘অনুমোদিত ব্যক্তি’র সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা করা এবং রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি ব্যতিরেকে গণমাধ্যম কর্মীদের অবাধে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ, ছবি তোলা এবং ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার করার সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
ছাত্র ফেডারেশনের সুপারিশ 
আচরণবিধির ৪ (গ) ধারাটি সংশোধন করে কোনো ব্যক্তির খ্যাতির মানদণ্ড সুনির্দিষ্ট করার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ফেডারেশন। এ ছাড়াও ৫ (গ) ধারাটি সংশোধন করে একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে ১টির পরিবর্তে ৩টি ও বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ৩টির বদলে ৫টি প্রজেকশন মিটিং করার অনুমতি চেয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে কোনোরূপ বাধা না দিয়ে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে সাংবাদিকদের ছবি তোলা ও ভিডিও করার ব্যবস্থা থাকার সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। এছাড়াও প্রত্যেক প্রার্থী নির্বাচনের ব্যয়সীমা নির্দিষ্ট করা, রঙিন পোস্টার না করা, নির্বাচনী ক্যাম্প না বসানো, আলোকসজ্জা না করা, ভোটার স্লিপ শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দেয়ার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব রেখেছে তারা।
ছাত্র ইউনিয়নের সুপারিশমালা :
ছাত্র ইউনিয়ন খসড়া সুপারিশমালার ৪ এর (গ) ধারা সংশোধন করে ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দের প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ। ৫ এর (গ) ধারাটিও সংশোধন চায় সংগঠনটি। এর বদলে প্যানেল পরিচিতি সভা প্রশাসনের উদ্যোগে করার সুপারিশ করেছে তারা। এছাড়াও ৬ (গ) ধারাটি সংশোধন করে দেয়ালে কোনো প্রচারণা না চালানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। একইসঙ্গে পূর্ববর্তী দেয়াল লিখন মুছে দেয়া, ভোটকেন্দ্রগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা এবং গণমাধ্যমের কর্মী এবং কোনো প্রার্থী সিসিটিভির ফুটেজ নিতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা তা দিতে বাধ্য থাকার প্রস্তাবও আছে ছাত্র ইউনিয়নের আচরণবিধি সংস্কার প্রস্তাবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সুপারিশ:
‘আচরণবিধির খসড়াটির ৪ নম্বর ধারা’ অনুযায়ী প্রস্তাব হলো প্রচারণার সময় রাত ১০টার বদলে রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ানো। খসড়ার ৫নং ধারার (ক) ও (খ) উপধারা অনুযায়ী প্রস্তাবনা হলো মৌখিকভাবে জানানোর বিষয়টি থাকতে পারে, যাতে দুইটি অনুষ্ঠান একই স্থানে না পড়ে যায়। একই ধারার (ঘ) উপধারার বিপরীতে সংগঠনটির প্রস্তাব হলো- মৌখিকভাবে বলার বিধান থাকাই যুক্তিযুক্ত। কারণ, (ঙ) ও (চ) উপধারায় যা বলা আছে, তারপরও লিখিতভাবে অনুমতির বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের পরিচায়ক। ৬ (ক) উপধারার ক্ষেত্রে তাদের মতামত হচ্ছে পোস্টার ও হ্যান্ডবিল, লিফলেটের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেয়া যেতে পারে। হ্যান্ডবিল ৩৫ হাজার এবং পোস্টার ৫ হাজার কপি হতে পারে। খসড়া আচরণবিধির ৭ নং ধারার (ক) উপধারা মোতাবেক প্রস্তাব হলো- নির্বাচনী আচরণবিধিতে গণচাঁদার বিষয়টি যুক্ত করা। ৮ (ক) উপধারা এবং ৮নং ধারার পরের উপধারার বিপরীতে প্রস্তাব হলো- সংগঠনগুলোর মধ্যে পারস্পরিক গঠনমূলক সমালোচনার বিধি প্রয়োজনীয়। নতুবা যেকোনো কথাকেই ‘কোট’ (উদ্ধৃত) করে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করার ফাঁক থেকে যায়। ৫ (চ) উপধারার জন্য প্রস্তাব হলো- ক্লাসরুমে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতামত বিনিময়ের সুযোগ (ক্লাস ক্যাম্পেইন) যেমন থাকতে হবে, একইসঙ্গে বক্তব্য প্রচারের জন্য করিডোরে মিছিলের মতো প্রচলিত ও সর্বজনস্বীকৃত কার্যক্রমকে ‘নির্বাচনী আচরণবিধি’তে যুক্ত করতে হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সকল শিক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করতে পারে; কোনো রাজনীতি সংগঠন যাতে ক্যাম্পাসে সকলের সহাবস্থানে কোনো প্রকার বাধা সৃষ্টি না করতে পারে; সম্প্রতি যারা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উপর বিভিন্ন ভাবে হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; ঢাবির বিভিন্ন হলে আবাসিক শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো প্রকারের নির্যাতন বা ভয়ভীতির সম্মুখীন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে এবং সর্বোপরি ডাকসুর নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই ক্যাম্পাসে নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা।

No comments

Powered by Blogger.