যে জেলখানায় অর্থের বিনিময়ে চলে অসামাজিক কর্মকান্ড

পানামার চিরিকু সরকারি কারাগার। সেখানে অর্থের বিনিময়ে চলে সব অসামাজিক কর্মকান্ড। বন্দিরা ভোগ করেন নানারকম সুযোগ সুবিধা। এমনকি নারীসঙ্গও পেতে পারেন তারা। তাদেরকে অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করা হয় এসকর্ট। এসব তথ্য ওই জেলখানার ভিতর থেকে জানিয়েছেন সিরিয়াল কিলার উইলিয়াম ওয়াইল্ড বিল হোলবার্ট। তার বর্ণনা প্রকাশ করেছে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ। হোলবার্ট বলেছেন, প্রতিদিনই ওই জেলখানার ভিতর বিক্রি হয় মাদক।
রশি ব্যবহার করে তা পৌঁছে দেয়া হয় এক সেল থেকে আরেক সেলে। তার ভাষায়, আমি মোটেও মাদক ব্যবহার করি না। মাদক ব্যবহার করলে যে অনুভূতি হয় তা আমি পছন্দ করি না। মাদক বিক্রির সঙ্গে আমি জড়িত নই। মাদক বিক্রির যে লাইসেন্স লাগে আমি তা বিক্রি করি। যদি এই জেলখানায় আপনি মাদক বিক্রি করতে চান তাহলে আপনাকে একটি লাইসেন্স কিনতে হবে।
মাত্র ৪০০ ডলার বা ৩১০ পাউন্ড হলেই একজন বন্দি তার হাতে পেয়ে যেতে পারেন অস্ত্র। মাত্র ৪০০ ডলারে বিনিময়ে একটি ছোট ০.৩৮ মানের গ্লোক ৯এমএম পাওয়া যায়। হোলবার্ট বলেন, রাস্তায় যে পরিমাণ অস্ত্র আছে, তার চেয়ে বেশি অস্ত্র আছে এই জেলখানায়। আমার কাছে নেই। তবে সবার কাছে একটি করে আছে। তিনি আরো যোগ করেন, বন্দিরা দেশে তৈরি ছুরিরও কিনতে পারে। কিন্তু জেলখানায় এত অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও বন্দিদের শুভ বুদ্ধির কারণে এর ভিতরে খুব কমই হত্যাকা- ঘটে। মাসে একটার মতো হত্যাকান্ড ঘটে। কিন্তু পানামা সিটিতে একটি বড় জেলখানা আছে, যেখানে প্রতিদিনই হত্যাকা- ঘটে।
তিনি বলেন, যদি এই জেলখানায় কোনোকিছু দরকার হয় আমাকে অর্থ দিতে হবে আপনাকে। কারণ, এখানকার অফিস চালাই আমি। আমি খুব ভাল আছি। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী আমার সন্তানদের ভালভাবে দেখাশোনা করি। জেলখানায় আমি হলাম একজন রকস্টার। আমি এমন একজন মানুষ, যেখানেই যাই ,সেখানেই আমাকে অত্যন্ত ভালবাসে গ্রহণ করা হয়। আমি প্রতিদিনই এখানকার রাস্তার খাবার খেতে পারি। শহরে আমার স্ত্রী পিৎজা হাটে অথবা কেনটাকি ফ্রাইড চিকেনে যান। প্রতিদিনই সেখান থেকে আমার জন্য কিছু না কিছু কিনে আনেন তিনি।
হোলবার্ট নিজেকে সিরিয়াল কিলার হিসেবে দেখেন না। তিনি মনে করেন, সহিংস হত্যাকান্ডের পাপের জন্য তিনি দোষী। ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তিনি ওইসব হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন দিনের আলোতে।
তিনি নিজে একচি বালক ও চারজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষকে হত্যা করা সত্ত্বেও জেলখানার বন্দিদের মানবাধিকার নিয়ে তিনি সোচ্চার। তিনি মনে করেন, তাদেরকে রাখা হয়েছে নোংরা সেলে, যেমনটাতে তিনিও বসবাস করছেন। বলেন, সেলগুলোতে মানুষে উপচে পড়ছে। নৈশভোজে দেয়া হয় নষ্ট ও বাজে সব খাবার। তার অভিযোগ, এসব খাবার খেয়ে তাদের মধ্যে যৌন উদ্দীপনা লোপ পায়। জেলখানা সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা হলো এমন একটি স্থান যেখানে মানুষের মাংস জমা করা হয়, তাদের কোনো পূনর্বাসন নেই।
(বাকি অংশ আগামীকাল)

No comments

Powered by Blogger.