নাগরিকত্ব দেয়ার নামে চালাকি চলছে, কোনো সত্যতা নেই: মমতা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, নাগরিকত্ব দেয়ার নামে প্রহসন চলছে। এসবের মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। তিনি আজ (সোমবার) পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় ভাষণ দেয়ার সময় ওই মন্তব্য করেন।
মমতা আজ কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করে নাগরিকত্ব, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি), মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ইত্যাদি ইস্যুতে তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি সভায় উপস্থিত মানুষজনের মধ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘বলুনতো এখানে যত লোক আছেন, তরুণ প্রজন্ম ছাড়া যারা আমাদের জেনারেশনের বা পরের জেনারেশনের তাঁদের বাবা-মায়ের জন্ম প্রমাণপত্র আছে? আছে? কত জনের কাছে আছে? তাহলে জন্ম প্রমাণপত্র না দিতে পারলে তোমাকে এনআরসি থেকে বাদ দেয়া হবে! তুমি আবাসিক নও। দেশে আজ এ সমস্ত চলছে।’
মমতা বলেন, ‘কোথা থেকে থিওরি নিয়ে এসেছে কখন কাকে তাড়াবে। ওঁরা নাগরিকত্ব দেবেন, নাগরিকত্বের জন্য যেন আমরা বসে আছি। আমরা এই মাটিটাকে স্বাধীন করেছি। এই মাটিতেই আমাদের জন্ম, এই মাটিতেই মৃত্যু এই মাটিতেই কর্ম, এই মাটিতেই ধর্ম, আর ঠিক করবে কাকে কোনদিন নাগরিকত্ব দেবেন!’
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্বের থিওরি কী? তুমি ছয় বছরের জন্য বিদেশি হয়ে যাও! প্রথম তোমাকে বিদেশি বানাবো। তার পরে তোমাকে নাগরিকত্ব দেবো। ‘না ঘর কা, না ঘাট কা’ অর্থাৎ ওদিকেও গেল, এদিকেও গেলো। বুঝতে পারলেন চালাকিটা? সুতরাং এগুলো নির্বাচনি তত্ত্ব, এগুলোর মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। এগুলো নিয়ে আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না। আমরা যতক্ষণ বেঁচে আছি, আর কাজের মধ্যে আছি এই সমস্ত ভয় দেখিয়ে, প্ররোচনা সৃষ্টি করে, প্রলোভন দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।’    
মমতা বলেন, ‘যারা এদেশের নাগরিক তাদেরকে দু’বার করে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হচ্ছে, তাঁদেরকে বিদেশি বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন না। নাগরিকত্ব একবারই হয় এবং প্রত্যেকেই আমরা এদেশের নাগরিক। আমরা ভোট দিই, আমাদের ব্যাঙ্কে একাউন্ট আছে, আমাদের প্রত্যেকে পড়াশোনা করেছে, কেউ না কেউ চাকরি-বাকরি করেছে। বাংলাকে অত মাইনাস পয়েন্টে ভাবার কোনো কারণ নেই। বাংলার লোকেদের সেন্টিমেন্টে সুড়সুড়ি দিয়ে একে তাড়াবো, ওকে তাড়াবো বলবার কোনো কারণ নেই।’
‘বাংলার মানুষ আমরা যতদিন বাঁচব আধখানা রুটি খেলে আধখানা রুটি আমরা ভাগ করে খাবো। কিন্তু আমরা কাউকে তাড়িয়ে দেয়ার লোক নই। আমরা সবাইকে নিয়ে চলি। এটা আমাদের মাধুর্য’ বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন।

No comments

Powered by Blogger.