ইরানের সামরিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নে মার্কিন উদ্বেগ

বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। মহাকাশে উপগ্রহবাহী রকেট প্রেরণ, ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি ঘটনা আমেরিকার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা তাই অমূলক প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতকাল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি বৃদ্ধি এবং মহাকাশ গবেষণার উন্নয়নের প্রতিক্রিয়ায় হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন ইরানকে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। পম্পেও দাবি করেন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ প্রস্তাবের লঙ্ঘন। তিনি আরও বলেন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তিই মহাকাশ গবেষণার উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়।
মার্কিন কর্মকর্তাদের এই অবস্থান বা প্রতিক্রিয়া নতুন কিছু নয় কিংবা এখানেই শেষ নয়। তারা ইরানের সামরিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নকে সবসময়ই বিশ্বের জন্য হুমকি বলেও মন্তব্য করে এসেছে। গত চল্লিশ বছর ধরে তারা ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে তাদের শত্রুতার প্রকাশ ঘটিয়ে এসেছে। তাদের শত্রুতা মূলতা ইরানের ইসলামি ও বিপ্লবী সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। বিপ্লব বিজয়ের চল্লিশ বছর পূর্তি উদযাপনকে সামনে রেখে তাদের ওই শত্রুতার মাত্রা এখন শীর্ষে পৌঁছেছে। ইরানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক চাপ, নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ হেন কোনো উপায় নেই যা তারা কাজে লাগায় নি। মজার ব্যাপার হলো ইরানের যত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সবই অর্জিত হয়েছে মার্কিন এইসব নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধের মধ্যে। সুতরাং বোঝাই যায় ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত মার্কিন সকল নিষেধাজ্ঞাই ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে নিরুপায় হয়ে তারা এখন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রকে বিশ্বের জন্য হুমকি বলে মিথ্যাচার করতে শুরু করেছে।
পম্পেও নিরাপত্তা পরিষদের যে প্রস্তাবটির কথা বলেছেন ওই প্রস্তাব অনুযায়ী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে ইরানের কোনো বাধা নেই এমনকি মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রেও কোনো সীমাবদ্ধতা ইরানের ওপর আরোপ করা হয় নি। ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবটি ইরানের পরমাণু সমঝোতা চুক্তি সংক্রান্ত। পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বেরিয়ে গেলেও তারা ওই প্রস্তাব নিয়ে কথা বলছে, বিষয়টা খুবই হাস্যকর।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জাওয়াদ জারিফ বলেছেন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা কিংবা মহাকাশে উপগ্রহবাহী রকেট প্রেরণ করা ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন নয়। তাছাড়া আমেরিকা স্বয়ং ওই প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে। সুতরাং এ নিয়ে কথা বলার সুযোগ আমেরিকার নেই।
বিশ্লেষকের মতে, প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি করা যে-কোনো দেশের অধিকার। সুতরাং আমেরিকার হুমকি ধমকি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ইরানের উন্নয়ন দমিয়ে রাখতে পারবে না। সম্প্রতি আইআরজিসির পলিটিক্যাল ব্যুরো প্রধান ব্রিগেডিয়ার ইয়াদুল্লাহ জাভানি বলেছেন: ক্ষেপণাস্ত্র শক্তিতে ইরান এখন বিশ্বের প্রথম সারির চারটি দেশের অন্তর্ভুক্ত।

No comments

Powered by Blogger.