বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল পেয়েছে গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন by ইকবাল আহমদ সরকার

সদ্য উৎক্ষেপণ হওয়া বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন প্রাথমিক সিগন্যাল গ্রহণ করেছে। স্যাটেলাইটটি স্বাভাবিক গতিতেই তার গন্তব্যে যাচ্ছে। কক্ষপথে এটা পৌঁছতে আরো সাত থেকে নয়দিন লেগে যাবে। গাজীপুর গ্রাউন্ড থেকে স্যাটেলাইটটি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। গাজীপুর গ্রাউন্ড-এর স্যাটেলাইট অপারেটর প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, উৎক্ষেপণের ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন প্রাথমিক সিগনাল পেয়েছেন। প্রথমে তারা কানে এবং পরে ইন্টারনেটে সিগন্যালটি পেয়েছেন। কক্ষপথে এটা পৌঁছতে আরো সাত থেকে নয়দিন লেগে যাবে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই, স্যাটেলাইটটি সুন্দরভাবে ও স্বাভাবিক গতিতেই তার গন্তব্যে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সব ধরনের সার্বিক কার্যক্রম গ্রহণে তিন মাস সময় লাগবে। তিনি আরো বলেন, তাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি স্বাভাবিক রয়েছে। এই স্যাটেলাইটটির সুবিধাদি পেতে আরো সময় লাগবে। আর এতে আমরা টেলিভিশন ব্রডকাস্টিং, ব্রডব্যান্ড সুবিধা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরাও এর সার্ভিস পেয়ে যাব। কমিউনিকেশনসহ আমাদের অনেক ক্ষেত্রেই অনেক উন্নতি ঘটবে এর মাধ্যমে।
গাজীপুর সিটির জয়দেবপুরের টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজের পাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। দেশের এ গ্রাউন্ড স্টেশন থেকেই বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে বেতবুনিয়ার গ্রাউন্ড স্টেশনটি রয়েছে ব্যাকআপ স্টেশন হিসেবে। মূলত কাজ হবে গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকেই। গাজীপুর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশনে সিগন্যাল আদান-প্রদানে ১০ টন ওজনের দুটি অ্যান্টেনা ইনস্টলেশন করা হয়েছে। স্টেশনে বিদ্যুতের জন্য জেনারেটর স্থাপন ও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ছয়টি বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। এ গ্রাউন্ড স্টেশনটি হচ্ছে দেশের পুরো স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের ব্রেইন।
মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পরিচালনা, সফল ব্যবহার ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ইতিমধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। নতুন এ কোম্পানিতে কারিগরি লোকবল নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। ১৮ জন লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিটিআরসি থেকে আরো জনবল নিয়ে প্রাথমিকভাবে ৩০ জনের একটি দল গাজীপুরের স্টেশনে কাজ করবে। থ্যালাস এলিনিয়া প্রথম তিন বছর বাংলাদেশের সঙ্গেই স্যাটেলাইটটি পর্যবেক্ষণের কাজ করবে। এ সময়ে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে তারা এর দেখাশোনার পুরো দায়িত্বভার বাংলাদেশের ওপরই ছেড়ে দেবে।
স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন-৯ রকেটের নতুন সংস্করণ ব্লক ফাইভ বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ২টা ১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার আধা ঘণ্টা পর পৌঁছে যায় জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে।

No comments

Powered by Blogger.