সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শিশু হুমকির মুখে

মিয়ানমার ও বাংলাদেশে বসবাসরত সাত লাখ ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফের বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেডার। তিনি শুক্রবার জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। তিনি বলেন, এর মধ্যে বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর আশ্রয় শিবিরগুলোতে বাস করছে পাঁচ লাখ ৩৪ হাজার এবং সহিংসপূর্ণ রাখাইন রাজ্যে রয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু। প্রতিবেদনে ইউনিসেফ বলেছে, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মৌসুমে সৃষ্ট বন্যায় জরাজীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো প্লাবিত হতে পারে। আর তেমনটা হলে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যাবে। এতে ক্লিনিক, শিক্ষাকেন্দ্র ও শিশুদের জন্য চালু করা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। জাতিসংঘের শিশু ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের জরুরি কর্মসূচির পরিচালক ম্যানুয়েল ফন্টেইন বলেন, ‘প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু মূলত আটকে পড়েছে! হয় তারা সহিংসতার মধ্যেই মিয়ানমারের ভেতরে বাসস্থান পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছে অথবা দেশে ফিরতে না পারার কারণে বাংলাদেশের জনাকীর্ণ ক্যাম্পগুলোতে অসহায়ের মতো ঘুরছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা এমন এক সংকট,
যার কোনো ত্বরিত সমাধান নেই এবং এই সংকট নিরসনে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে, যদি এ সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা না নেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করা হলে তা শরণার্থীদের জন্য মিয়ানমারে তাদের আগের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা, নাগরিকত্ব, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর সুযোগসহ একটি সুন্দর ভবিষ্যতের সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গারা বাড়ি ফিরে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ম্যানুয়েল ফন্টেইন। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যের অনেক অংশে প্রবেশাধিকার না থাকায় ইউনিসেফ ও অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। ইউনিসেফ বলছে, অবিলম্বে এবং নির্বিঘ্নে এসব শিশুর পৌঁছানোর সুযোগ দেয়া দরকার। একই সঙ্গে আন্তঃসাম্প্রদায়িক উদ্বেগ চিহ্নিত করতে এবং সামাজিক সহাবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরতে দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টাও অপরিহার্য। এডুয়ার্ড আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টিতে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

No comments

Powered by Blogger.