এডিসি ও ইউএনওকে হাইকোর্টে তলব

লক্ষ্মীপুরের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন শরীফকে মোবাইল কোর্টে তিন মাসের সাজা দেয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে জেলার এডিসি ও সাজা প্রদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। তারা হচ্ছেন- লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। আগামী ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফকেও আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে লক্ষ্মীপুরের এডিসি মুর্শিদুলকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে মঙ্গলবার এক আদেশ জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক আদেশে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মুর্শিদুলকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। আদেশে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজীম। রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী ও আশফাকুর রহমান।
আদেশের পর ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজীম সাংবাদিকদের বলেন, পত্রিকায় এসেছে লক্ষ্মীপুরের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্টে একজন সাবেক সিভিল সার্জনকে সাজা দিয়েছেন। এডিসির সঙ্গে ওই ডাক্তারের বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সেটা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরে তাকে ডিসি অফিসে নিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর দু’জন আইনজীবী সংক্ষুব্ধ হয়ে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ব্যক্তি আক্রোশের কারণে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রমের যে অপব্যবহার, সেটা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেছেন। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রও সঙ্গে আনতে বলেছেন। ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনও ব্যক্তিগতভাবে আসবেন এবং আদালতের সামনে ওনারা বক্তব্য রাখতে পারবেন। ব্যারিস্টার আজীম বলেন, মোবাইল কোর্টের অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে যেভাবে একজন চিকিৎসককে অপদস্থ করা হয়েছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এতে আইনের শাসনের চরম ব্যত্যয় হয়েছে। উল্লেখ্য, ৪ ডিসেম্বর সকালে লক্ষ্মীপুর শহরের কাকলি শিশু অঙ্গন বিদ্যালয়ে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনায় লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলামের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ এনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে কারাগারে পাঠায়। পরদিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর শওকত হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।

No comments

Powered by Blogger.