শুরুতেই নজিরবিহীন আক্রমণ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার শুরুতেই তীব্র বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার একে অপরের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ করেন তারা। ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থীকে উদ্দেশ করে বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদের জন্য একেবারেই অযোগ্য। তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত নন। অন্যদিকে, পাল্টা আক্রমণে ট্রাম্প বলেছেন, হিলারিকে দেখতে প্রেসিডেন্টের মতো লাগে না। পুতিন (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) তাকে দেখলে হাসেন।’ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, আগামী ৬২ দিনের নির্বাচনী প্রচারণায় এমন আক্রমণ চলতেই থাকবে। আগামী ৮ নভেম্বর নির্বাচনের আগে হিলারি ও ট্রাম্প তিন দফা বিতর্কে অংশ নেবেন। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে আর তিন সপ্তাহ পরেই। সেটি দেখার জন্য মার্কিনিদের পাশাপাশি কৌতূহলী বিশ্ববাসী। ট্রাম্প সব বিতর্কে অংশ নেবেন না বলে গত মাসে ইঙ্গিত দিলেও এখন বলছেন, তিনটি বিতর্কেই তিনি থাকবেন। এর আগে সোমবার থেকে শেষ ধাপের প্রচারণা শুরু করেন হিলারি ও ট্রাম্প। ক্লিভল্যান্ডে হিলারি ও ট্রাম্প খুব কাছাকাছি জায়গায় সমাবেশ করে প্রচারাভিযান শুরু করেন। হাজারখানেক সমর্থকের উদ্দেশে হিলারি বলেন, ‘আমি প্রস্তুত, খুব বেশিই প্রস্তুত।’ ভাষণ দেয়ার সময় কাশির দমক সামলাতে হিলারিকে থামতে হয়েছে। পরে পানি পান করে সামলে নেন পরিস্থিতি। এই নিয়ে সমালোচকদের একটি অংশ সরব হয়েছে। তাদের যুক্তি, হিলারির গুরুতর স্বাস্থ্যসমস্যা রয়েছে। তবে তিনি সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এগুলো ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’। মৌসুমি অ্যালার্জির কারণেই তার কাশি হয়েছিল।
নির্বাচিত হলে হিলারি ক্লিনটন হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। এদিন হিলারি আরও বলেন, মস্কো এখন ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে চাইছে। কারণ, ট্রাম্প মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই ওই গুপ্তচরবৃত্তি শুরু হয়েছিল। ট্রাম্পও সোমবার জনসংযোগ করেন। সেখানে তার ব্যক্তিগত বিমানযোগে যাত্রার জন্য কয়েকজন সাংবাদিকও আমন্ত্রণ পান। আকাশপথেই তিনি তুলে ধরেন অভিবাসন নিয়ে তার ভাবনাচিন্তা। অভিবাসন নিয়ে হিলারির অবস্থানের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, তার (হিলারি) পরিকল্পনা হল, পরিপূর্ণ দায়মুক্তি। কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের এ দেশ থেকে তাড়ানোর বদলে তিনি বৈধতা দিতে চান। কাজেই হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে যে কেউ সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়তে পারবে। এদিকে, মঙ্গলবার হিলারি ট্রাম্পের আয়কর রিটার্ন প্রকাশ না করা নিয়ে সমালোচনা করেন। হিলারির অভিযোগ, রিপাবলিকান প্রার্থীর আয়করের মধ্যে ঘাপলা রয়েছে। তাই তিনি তা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। অথচ রিচার্ড নিক্সনের মতো ব্যক্তিরাও নির্বাচনের আগে তাদের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করেছেন। আগামী দিনগুলোতে ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী রিটার্ন নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দেন তিনি। অন্যদিকে, হিলারি ক্লিনটন মেক্সিকো সফর বাতিল করার সমালোচনা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, হিলারির যোগ্যতা নেই মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কার্যকর আলোচনা করা। তাই তিনি আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এসময় ট্রাম্প নিজের সফরকে ‘বিরাট সাফল্য’ বলে দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.