রাখাইনে মুসলিম ও বৌদ্ধদের সঙ্গে কথা বললেন আনান

মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে কথা বলতে
গতকাল জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান সিত্তোয়ে
এলাকায় থেট কে পাইন শরনার্থী শিবিরে যান। এএফপি
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নির্যাতিত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। জাতিগত দাঙ্গায় বাস্তুহারা হওয়া এসব ব্যক্তি ছাড়াও সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। ইতিমধ্যে এই সাক্ষাৎ জাতিগত সহিংসতায় আক্রান্ত অনেকের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। গত মঙ্গলবার কফি আনানসহ কমিশনের সদস্যরা উত্তর-পশ্চিমের রাখাইন রাজ্যে পৌঁছে প্রথমেই বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তোপের মুখে পড়েন। এই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে পরামর্শ পাওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের অঘোষিত প্রধান অং সান সু চি নয় সদস্যের এই কমিশন নিয়োগ দেন। গতকাল মিয়ানমারের ছয়জন নাগরিক এবং কফি আনানসহ তিনজন বিদেশি রাজ্যটির বাস্তুহারা লোকদের অবস্থা দেখতে ক্যাম্পে যান। এ সময় তাঁরা উভয় সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গেই কথা বলেন। কফি আনান ও তাঁর কমিশনের সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
যাঁদের সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাৎ করেছেন তাঁদের একজন হলেন দার পাইং কস্পের বাসিন্দা হ্লা মিন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে কমিশন সাহায্য করবে।’ থেট কে পাইন নামে আরেক ক্যাম্পে বাস করে প্রায় ৫০০ মুসলিম। তাদের ধর্মীয় নেতা কিয়াও জান লা বলেন, ‘শত শত বছর ধরে দুই সম্প্রদায় একসঙ্গে বাস করছে। আমরা রোহিঙ্গারা রাখাইনদের সঙ্গেই থাকতে চাই।’ যদিও রাজ্যটির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল কমিশনের বিরোধিতা করে বলেছে, আঞ্চলিক বিষয়াদি বিদেশিরা বুঝবে না। এ রাজ্যটি নিয়ে বরাবরই খুব সতর্ক অবস্থানে থাকছেন সু চি। কিন্তু গত নভেম্বরের নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের পর এ নিয়ে অনেক স্পষ্টবাদী অবস্থান নিয়েছেন তিনি। রাখাইনে ২০১২ সালের বৌদ্ধ-মুসলিম দাঙ্গায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর থেকে সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছে এ দুই জাতিগোষ্ঠী। সোয়া এক লাখ মানুষ, যারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ, তারা সেখানকার ক্যাম্পে থাকে।

No comments

Powered by Blogger.