রিসা হত্যার আসামি গ্রেপ্তার

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিসা হত্যার আসামি ওবায়দুল খানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো, জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্মিলিত চেষ্টায় যেকোনো অসাধ্য–সাধন করা যায়। গত বুধবার নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজার থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করলেও এর পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাংস ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন ও ইজিবাইকচালক ইসমাইল হোসেন আসামিকে কৌশলে সোনারায় বাজারে নিয়ে এসে পুলিশকে খবর দিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা সহজ হয়। যাঁরা রিসা হত্যার আসামিকে গ্রেপ্তারে সহায়তা করেছেন, তাঁদের অভিনন্দন জানাই। অভিনন্দন জানাই উইলস লিটল ফ্লাওয়ার বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও, যাঁরা অপরাধীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নজিরবিহীন না হলেও ব্যতিক্রমী। অভিভাবকেরা যথার্থই প্রশ্ন রেখেছেন, যদি একজন ছাত্রী এভাবে রাজপথে ঘাতকের হাতে খুন হয়,
তাহলে মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? বাবা-মা কোন সাহসে সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন? গত ২৪ আগস্ট রিসা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এই হত্যাকাণ্ড কেবল ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরই কাঁদিয়েছে, তা নয়। বিচলিত ও উদ্বিগ্ন করেছে দেশের প্রতিটি শান্তিকামী ও বিবেকবান মানুষকে। আমরা মনে করি, রিসা হত্যার আসামির গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব শেষ হয়নি, শুরু হলো মাত্র। অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে তদন্তকাজেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনুরূপ দক্ষতা ও আন্তরিকতা প্রত্যাশিত। রিসা হত্যার বিচারের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে যে খুনির ক্ষমা নেই। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। রিসার ঘটনা আমাদের সামনে এই সত্যই তুলে ধরেছে যে অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনতে সাধারণ মানুষও অসাধারণ ভূমিকা রাখতে পারেন। এই সাধারণ মানুষকে সাহস জোগানো সমাজের এবং পুরস্কৃত করা সরকারের দায়িত্ব।

No comments

Powered by Blogger.