একটু সচেতন হলেই অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো যায়

ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়ি যাওয়া-আসার পথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এই বাস্তবতা মনে রেখে সংবাদমাধ্যম এ সম্পর্কে আগাম সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দিয়ে থাকে। এ বছরও আমরা ঈদের আগে তা করেছি। কিন্তু দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি, বেশ কিছু মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু তাঁদের স্বজনদের ঈদের আনন্দকে মাতমে পরিণত করেছে। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর, রাজশাহীর চারঘাট, বরিশালের গৌরনদী, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও নেত্রকোনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন ঈদের ঠিক আগের দু-তিন দিনে। এ ছাড়া ঈদের দিন ঢাকার অদূরে কাঁচপুর ব্রিজের কাছে একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষের ফলে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ঈদের পরদিন বিকেলে রংপুরের তারাগঞ্জে এক মিনিবাস একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে অটোরিকশার চালকসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে পাঁচজন একই পরিবারের সদস্য। একই দিনে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় যাত্রীসহ এক ভটভটি রাস্তার পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ভটভটির যাত্রী তিন কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে।
লক্ষণীয় বিষয়, অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনাই ঘটেছে ভটভটি, সিএনজিচালিত কিংবা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ইত্যাদি ছোট মোটরযানের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে। কোথাও এগুলো নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছে ধাক্কা খেয়েছে, কোথাও খাদে পড়েছে, কোথাও বাস বা অন্য কোনো বড় মোটরযানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে। এই সব ছোট যানবাহন মহাসড়কে চলাচলের ফলে বড় যানবাহন যথা বাস ও ট্রাকের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। বিশেষত ভটভটি, নছিমন-করিমন, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মতো অনুমোদনহীন মোটরযানগুলো ঈদের সময় মহাসড়কগুলোতে বাড়তি ঝুঁকির কারণ হয়। মহাসড়কগুলোতে এগুলোর চলাচল পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা উচিত। প্রতিবছরই ঈদের পরে লাশ গুনতে হয়—এ বড় মর্মান্তিক এক বাস্তবতা। কিন্তু আমরা একটু সচেতন হলেই অনেক দুর্ঘটনা এড়াতে পারি।

No comments

Powered by Blogger.