জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় সতর্ক নিউইয়র্ক নগর

সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা মোকাবিলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে গঠন করা হয়েছে বিশেষ ইউনিট। স্থল, জল বা আকাশ পথের যে কোনো হামলা দ্রুত সামাল দেওয়ার জন্য নিউইয়র্ক প্রস্তুত। নিরাপত্তা প্রস্তুতির এসব তথ্য দিয়েছেন নিউইয়র্ক পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ব্যুরোর প্রধান জেমস ওয়াটার্স। এনবিসি নিউজকে জেমস ওয়াটার্স বলেছেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গিগোষ্ঠী যে কোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালাতে পারে। পরবর্তী হামলার জন্য নিউইয়র্ক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ নগরী। জেমস ওয়াটার্স জানান, নিউইয়র্কে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫২৫ জনের একটি পৃথক দল সার্বক্ষণিক কর্মরত। জঙ্গি হামলা ঠেকাবার জন্য ৫২৫ জনের এ দলের সঙ্গে ১০০ জনের আরেকটি বিশেষায়িত চৌকস দল ভারী অস্ত্র নিয়ে সব সময় দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। বোমা, বিস্ফোরক বা মারাত্মক রাসায়নিক অস্ত্র শনাক্ত এবং সামাল দেওয়া চৌকস দলের কাজ। ম্যানহাটানের কমান্ড সেন্টার থেকে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে পুরো নগরীতে। নগরীর সড়ক, জনপথ, নৌবন্দর, বিমান বন্দর, বাস টার্মিনাল, রেলপথসহ জন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আছে নয় হাজার সি সি ক্যামেরা। সড়ক পথ, ব্রিজ, টানেল দিয়ে নিত্য চলা গাড়ির বহরের নম্বর প্লেট স্ক্যান করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নগরীতে আইএস বা অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্ভাব্য হামলা নিয়ে আগাম কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য বা সতর্কবার্তা নেই সরকারের কাছে। তবে কাউন্টার টেররিজম ব্যুরো প্রধান জেমস ওয়াটার্স মনে করেন,
নিউইয়র্ক সব সময়ই জঙ্গিদের হামলার অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশের কাউন্টার টেররিজম গোয়েন্দা বিশ্লেষক মেগান টেউবনার বলেছেন, ‘প্রতি মুহূর্তে আমরা খবর রাখছি সারা বিশ্বে কী ঘটছে। জঙ্গিরা নতুন কোন কৌশল অবলম্বন করছে।’ সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিরা বিভিন্ন দেশে যে সব হামলা পরিচালনা করেছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানান টেউবনার। হামলার ধরন, পুরোনো-নতুন কৌশল বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধের জন্য নিউইয়র্কের পুলিশ বিভাগকে (এনওয়াইপিডি) সব সময় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিউইয়র্কের কমান্ড সেন্টারে রয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষিত কুকুর। মাত্র একটি কুকুর পুরো একটি ট্রেন বা বিমানবন্দরে কোনো বিস্ফোরক আছে কি না, তা মুহূর্তে পরখ করার ক্ষমতা রাখে। নিউইয়র্ক নগরীর কমান্ড সেন্টারে প্রতিদিন ৩০ লাখ চলমান গাড়ির প্লেট নম্বর, গাড়ির গতিবিধি পরখ করা হচ্ছে। সি সি ক্যামেরায় বা স্ক্যানারে ধারণ করা এসব তথ্য আবার পাঁচ বছরের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে এনওয়াইপিডি’র কাউন্টার টেররিজম কমান্ড সেন্টারে। গতকাল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষে নিউইয়র্কে উপচে পড়া ভিড়। মেসিসের বিখ্যাত চার জুলাইয়ের আতশবাজির খেলা দেখার জন্য বিভিন্ন রাজ্য থেকে লোকজন ছুটে আসে এখানে। ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার পর্যটকেরাও এ সময়ে নিউইয়র্কে এসে জড়ো হয়। মেসিসের আতশবাজি দেখতে নগরীতে ২০ লাখ লোকের সমাগম হয় বলে মনে করা হয়। এ সময়টিতে পর্যটকসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ক’দিন থেকেই এন ওয়াই পি ডি’র বাড়তি তৎপরতা দৃশ্যমান ছিল।

No comments

Powered by Blogger.