আবার ক্রুইফ আবার চ্যালেঞ্জ

‘মাসকয়েকের জন্য কক্ষচ্যুত হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। কাক্সিক্ষত ফল পায়নি। কারণ ফুটবল সঠিক পথে ছিল না। নানামুখী সমস্যায় ছিল জর্জরিত’, ঢাকায় ফিরেই বলেছেন জাতীয় ফুটবল দলের ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। প্রায় ৯ মাস পর বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিতে আবারও ঢাকায় এসেছেন। তিনি মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় পৌঁছে বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিষ্যদের নিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়েন। ফুটবলারদের কুশল বিনিময়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ক্রুইফ। তার কথা, ‘আট মাসে বাংলাদেশ তিনজন কোচ বদল করেছে, যা কখনও ফুটবলের জন্য সুস্থ ধারা হতে পারে না। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি ছাড়া কোনো কোচই দলকে স্থায়ী সাফল্য এনে দিতে পারেন না। পৌনে এক বছর আমি বাংলাদেশে ছিলাম না। আবার দায়িত্ব নিয়ে এসেছি।
নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে আমি মোটেই ভয় পাই না। বাংলাদেশের ফুটবলারদের চিনি, জানি। কীভাবে তাদের আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য তৈরি করতে হয়, সেটা আমার জানা আছে।’ ক্রুইফের কথা, ‘বাফুফের বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পর আমি অভিনন্দন জানাই। কেননা এর সঙ্গে আমার প্রত্যাবর্তনটাও জড়িয়ে ছিল। সালাউদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার পর তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। আমি আবারও বাংলাদেশে ফিরে এসেছি। এবার এক মাসের জন্য দায়িত্ব নিয়েছি। ২ ও ৭ জুন তাজিকিস্তানের সঙ্গে দুটি ম্যাচ খেলার পর আমি ৯ জুন ফিরে যাব। বাংলাদেশের ফুটবলে যে নিুগামী ধারা চলছে, তা থেকে দলকে টেনে তুলতে চাই। ফিরিয়ে আনতে চাই ফুটবলের সাফল্য। আমার জন্য এ কাজ অনেকটাই সহজ। কেননা আমি বাংলাদেশের ফুটবলের পারিপার্শ্বিক অবস্থা জানি।’ ক্রুইফ বলে যান, ‘জর্জ কোটান আবাহনীর কোচ হিসেবে ফিরে আসছেন। এতে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশের ফুটবলে একজন বিদেশী কোচের পক্ষে টিকে থাকা কতটা কঠিন। এখানে অনেক কিছুই বুঝতে হয়। সে অনুযায়ী চলতে হয়। তাজিকিস্তানের বিপক্ষে এই মাঠে ১-১ গোলে ড্রয়ের ম্যাচটা আমার স্মৃতিপটে উজ্জ্বল। ওদের একজন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেছিল। ৮৩ মিনিটে আত্মঘাতী গোল খেয়ে সে ম্যাচটি ড্র করি। অনেক সুযোগ নষ্ট করেছিলাম আমরা। সে ম্যাচটি হতে পারে এবারকার চ্যালেঞ্জে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। দুশানবেতে ০-৫ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। আমি ওই ম্যাচে ছিলাম না।
ইউটিউবে সে ম্যাচের অংশবিশেষ দেখেছি। বাংলাদেশ সে ম্যাচে ভালো খেলেনি। এই দুটি ম্যাচের নিরিখে আমি বলতে চাই, দুশানবেতে যদি আমরা ড্র করে আসতে পারি, তাহলে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের পক্ষে ম্যাচ জেতা সম্ভব।’ কোচের মন্তব্য, ‘আমি ন্যাশনাল টিম কমিটির কাছে মামুনুল এবং সোহেল রানাকে চেয়েছি। আমার খেলার ধারায় তাদের দরকার। জাহিদ ও ইয়াসিনের ব্যাপারে আমি বলব, তাদের স্বল্প সময়ে ফিরিয়ে আনা কষ্টকর। খেলোয়াড়রা একটি টুর্নামেন্ট খেলেছে। ফিটনেস অবস্থা ভালো। তাই এসব ব্যাপারে খুব একট উদ্বিগ্ন নই আমি। দুশানবেতে ২ জুন বাংলাদেশ কৌশলগত দিক দিয়ে ভালো ফুটবল খেলবে। এটি করতে পারলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি।’ কোচকে ফিরে পেয়ে খুশি জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম ও নাসির উদ্দিন চৌধুরী। মামুনুলের অনুভূতি, ‘দলকে সঠিকভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য এবং ফুটবলারদের উজ্জীবিত করার গুণ ক্রুইফের রয়েছে।’ গুরু সম্পর্কে নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ক্রুইফের ব্যক্তিত্ব ও ভিন্নধারার খেলার পদ্ধতি আমার ভালো লাগে, যা অন্য কোচের চেয়ে তাকে ব্যতিক্রমী করেছে।’

No comments

Powered by Blogger.