সংখ্যালঘুদের রক্ষায় রুখে দাঁড়ান

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গতকাল সকালে পায়রা
উড়িয়ে পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন
উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল
ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবং পূজা
উদ্‌যাপন পরিষদের নেতারা
ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জাতিসহ সব সংখ্যালঘুর অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এসব কথা বলেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘একজন হিন্দুকে হিন্দু বলে, একজন খ্রিষ্টানকে খ্রিষ্টান বলে, একজন গারোকে গারো বলে তার ওপর নির্যাতন করি। তার ওপর আঘাত করি। তার বাড়িঘরে আগুন লাগাই। এটা কিন্তু কোনো সভ্য লোকের কাজ হতে পারে না। আমি এটাকে মানবতা বলব না। এটাকে আমাদের প্রতিরোধ করতেই হবে। হিন্দুধর্মাবলম্বীরাই শুধু তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করবে, তা নয়। তা হলে আমি কেন আছি, বাকিরা কেন আছে?’ সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে ১০০ ভাগ মাইনরিটির সিকিউরিটি নিশ্চিত করেছেন, এটা বলব না। কিন্তু এ দেশে কোনো রকম সংখ্যালঘুর ওপর কেউ হাত তুলবে আর তিনি ঘরে বসে থাকবেন, সেটা হবে না।’ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গতকালও আটজন মারা গেল। যখন এর মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদেরও আত্মাহুতি দিতে হচ্ছে, এদের তো রক্ষা আমাদের নির্বাচন কমিশন করতে পারে না। এই রকম নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়ে তো আমরা আসি নাই। কমিশন ইচ্ছা করলে নির্বাচন বাতিলও করতে পারে, ইচ্ছা করলে নির্বাচন গ্রহণও করতে পারে। যে কারও চাকরি খেতে পারে। কিন্তু এ কেমন! লড়েও না, চড়েও না। আগায়ও না, পিছায়ও না। এইটা কী!’ আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীর সাজার ঘটনা নিয়েও কথা বলেন সুরঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘দুই মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন আর উনি (প্রধান বিচারপতি) বলেছেন দেখাইবেন। উনি দেখাইও দিছেন। দুই মন্ত্রী বলছে মাফ চাই, মাফ করে দাও। আপনি প্রধান বিচারপতি, আপনার তাদের মাফ করে দেওয়া উচিত ছিল।’ সুরঞ্জিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, ‘ওই নির্বাচনে আপনি অবশ্যই অংশগ্রহণ করবেন। তবে যে ভুলটি একবার করেছেন নওয়াজ শরিফ ও আইএসের কথায়, তা আর করবেন না।’ বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথের সভাপতিত্বে দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, সাংসদ পঙ্কজ নাথ, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব, সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্যসচিব তাপস কুমার পাল প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি।

No comments

Powered by Blogger.