ড্রেসিং রুমে দ্বন্দ্ব নিয়েই মাঠে নামছে ভারত

বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হেরে যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে ভারত। ভারতের ওয়ানডে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ও টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলির মধ্যে দ্বন্দ্ব- এমন কানাঘুষা অনেক আগের। কিন্তু প্রকাশ্যে কখনও বিষয়টি সামনে আসেনি। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হেরে সেটাই এখন সামনে চলে এলো। ধোনি-কোহলির দ্বন্দ্ব এখন চরম পর্যায়ে। আজ হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবে তারা। কিন্তু পিঠ বাঁচানো এমন ম্যাচের আগে গতকাল প্রকাশ পেলো বিস্ফোরক সংবাদ। ধোনির ব্যক্তিগত কোচ চঞ্চল ভট্টাচার্য বিরাট কোহলির ব্যক্তিগত কোচ রাজ কুমার শর্মা ভিন্ন ভিন্ন টিভি চ্যানেলে ভিন্ন মতামত দিলেন। ধোনির কোচ ভট্টাচার্য জানালেন, ভারতের ড্রেসিং রুমের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। অনেকেই কথা শুনছে না। ড্রেসিং রুমের বিরূপ আবহাওয়ার কারণেই নাকি ধোনি খেলায় মনোযোগ দিতে পারছেন না। এতে ধোনির দুশ্চিন্তা অনেক বেড়ে গেছে। ধোনির কোচের এ বক্তব্য প্রচারের এক ঘণ্টা পরই বিরাট কোহলির ব্যক্তিগত কোচ রাজ কুমার শর্মা আরেক টিভি চ্যানেলে দিলেন ভিন্ন বক্তব্য। সেখানে ড্রেসিং রুমের কোন কথা নেই। তার বক্তব্যে ভারতের শোচনীয় পরাজয়ের কথা উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে এই হার সবচেয়ে লজ্জাজনক। আমি ভারত ক্রিকেটের জন্য দ্বিতীয় ম্যাচে হারের দিনটিকে ‘ব্লাক সানডে’ বলতে দ্বিধা করবো না।’ দলের দুই খেলোয়াড়ের দুই কোচের আলাদা আলাদা এমন বক্তব্যে নড়েচড়ে বসেছেন অনেকে। এখন প্রশ্ন- আসলেই ভারতের ড্রেসিং রুমে কি হচ্ছে? অনেকে এটাকে দুই কোচের লড়াই বলে মনে করছেন। ধোনি ও কোহলি কেউ এ ব্যাপারে যেহেতু কথা বলেন নি তাই তাদের ধারণা এমন। তবে উৎসুকদের দৃষ্টি ভিন্নদিকে। তারা এটাকে ধোনি-কোহলির ভেতরকার দ্বন্দ্বের প্রকাশ্য রূপ হিসেবে দেখছে। খেলোয়াড়দের কথা কোচদের মুখ দিয়ে বের হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। দলের দুই তারকা খেলোয়াড়ের মধ্যে এমন দ্বন্দ্বের খবরের মধ্যে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো সরব। অনেক বর্ষীয়ান ক্রীড়া কলাম লেখক এখনই ধোনিকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। ভারতের জিম্বাবুয়ে সফর বাতিল করা নিয়েও ভারত ক্রিকেট বোর্ডের কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। আগামী মাসে ভারত ক্রিকেট দলের জিম্বাবুয়ে সফরের কথা ছিল। কিন্তু সেটা বাতিল করা হয়েছে। প্রথমে বলা হচ্ছিল, টেলিভিশন প্রচার সত্ত্ব নিয়ে ঝামেলার কারণে সফর বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু পরে জানা গেল আসল সত্য। বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হেরে বিধ্বস্ত-ক্লান্ত খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেয়ার জন্যই সফর বাতিল করা হয়েছে। অনেক সিনিয়র খেলোয়াড় নাকি জিম্বাবুয়ে সফর বাতিল করার জন্য বিসিসিআইয়ের কাছে অনুরোধ করেন। কিন্তু বিসিসিআইয়ের এ সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করছেন অভিজ্ঞরা। অনেকে প্রশ্ন করেছেন- খেলোয়াড়রা যখন টানা আইপিএল খেলেন, তখন ক্লান্তি যায় কোথায়? দেশের হয়ে খেলতে গেলেই যত ক্লান্তি! ভারত ক্রিকেট দলের ড্রেসিং রুমের প্রকৃত ঘটনা স্পষ্ট করে এখনও জানা যাচ্ছে না। তবে এমন দ্বন্দ্ব নিয়ে সাংবাদিকরা নানা প্রশ্ন করতে পারেন বলেই গতকাল সাংবাদিকদের সামনে ধোনি কিংবা কোহলি গেলেন না বলে অনেকে মনে করছেন। সংবাদ সম্মেলনে পাঠানো হয় স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিনকে। তিনি অবশ্য বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হারকে দলীয় ব্যর্থতা বললেন। অধিনায়ক ধোনির কোন দোষ নেই বলেই তিনি জানালেন। তবে আর যাই হোক সংবাদ সম্মেলনে অশ্বিনের হাজির হওয়া কি ধোনির আবেগি ইচ্ছার প্রতিফলনের এক ধাপ? দ্বিতীয় ওয়ানডে হারের পর বিধ্বস্ত ধোনি বলেছিলেন, আমাকে যদি দলের সমস্যা মনে হয় তাহলে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিন। আমি তো আর ইচ্ছা করে এ দায়িত্ব নেই নি। আমার কারণেই যদি দল হারে তাহলে আমি নেতৃত্ব ছাড়তে প্রস্তুত।

No comments

Powered by Blogger.