‘জিয়ার আদর্শ ধারণ করে বিএনপিকে এগিয়ে যেতে হবে’

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ, ক্যারিশমেটিক রাজনৈতিক কৌশল ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ব্যাখ্যা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠা, বিকাশ ও জিয়াউর রহমানের দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা এবং কর্মকা- তুলে ধরেন। একইসঙ্গে জিয়ার আদর্শকে বুকে ধারণ ও লালন করে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে চলার দিকনির্দেশনা দেন দলটির প্রতিষ্ঠাতাকালীন এ মহাসচিব। আজ বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বর্তমান বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী বলেন, যদি দেশের ও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চান, তাহলে আগে নিজেদের পরিবর্তন করুন। প্রত্যেককে একেকজন জিয়া হতে হবে। এক্ষেত্রে যদি ভুল করেন তাহলে ইতিহাস আপনাদের কাউকেই ক্ষমা করবে না। তিনি বলেন, জিয়া ছিলেন এদেশের রাখাল রাজা। তিনি ঘরে বসে বক্তব্য দিয়ে দেশ স্বাধীন করেননি। যুদ্ধ করেই দেশ স্বাধীন করেছিলেন। সারাদেশ ঘুরে ঘুরে নিজের হাতে উন্নয়ন কর্মকা-ের সূচনার মাধ্যমে একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনের কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্মের শিশু, কিশোর ও তরুণরা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জানে না। এই অপরাধ আমাদের। কারণ আমরা তার কাজকর্মকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পারিনি। এতে জিয়ার কোন রকম কোন ক্ষতি হয়নি, ক্ষতি হয়েছে আমাদের। বছরে দুদিন জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করা ভুল ও আত্মহত্যার শামিল। আমরা ভুলে গেছি জিয়াউর রহমানের কারণেই ক্ষমতায় গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, হতে পারে এটাই আমার শেষ বক্তব্য। আমি যদি ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি যেখানেই থাকি, জিয়াউর রহমানের আদর্শ বিশ্বাস করি, তার আদর্শ লালন করি। আমি জাতীয়তাবাদ পুনরুদ্ধার করতে চাই। জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে আর কেউ থাকুক আর না থাকুক আমি জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে আছি এবং থাকবো। তবে যদি বেঁচে থাকি তাহলে আবার দেখা হবে। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে পুনরায় সংগঠিত হতে হবে। এ জন্য জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জিয়ার আদর্শের শক্তিকে এক হতে হবে। বি. চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান কোনদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কোন কথা বলেননি। তার রাজনীতির সমালোচনা করতেন, ব্যক্তির নয়। সবসময় বলেছেন, আমরা কি করছি, আমরা কি করতে চাই। কিন্তু এখন আমরা সেখান থেকে অনেক দূর সরে এসেছি। রাজনৈতিক প্রতিবাদ ও বিরোধিতা করতে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছি। এটা জিয়ার শিক্ষা নয়। বি. চৌধুরী তার বক্তব্যে জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষিবিপ্লব, স্বনির্ভরতা, গার্মেন্ট খাতের প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ, নারীর কর্মখাত সৃষ্টি ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ এবং এসবের দূরদর্শী ইতিবাচকতার কথা তুলে ধরেন। দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি মঞ্চে না গিয়ে দর্শক সারির সামনে তার জন্য রাখা নির্ধারিত চেয়ারে বসে আলোচকদের বক্তব্য শুনেন।
এদিকে বিএনপির যৌথসভা কাল। সকাল ১১টায় দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা ডাকা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, জিয়াউর রহমানের ৩৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ যৌথ সভা ডাকা হয়েছে। যৌথসভা শেষে দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করার কথা গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.