‘যে যত বেশি খারাপ কথা বলেন হাসিনার কাছে তত বেশি প্রিয়’ by তানজির আহমেদ রাসেল

শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার পরিকল্পনা, কল্পনায় পরিণত হতে আর বেশি দেরি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন,  বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ এক অশুভ শক্তি। এই অশুভ শক্তির প্রধান রং হেডেড শেখ হাসিনার কাছে দেশ কুক্ষিগত। তিনি বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ নন। তার কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ কিছুই নিরাপদ নয়। তারেক রহমান  বলেন, ৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনই প্রমাণ করে বাংলাদেশের জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। বিদেশের কাছে ধরনা দিয়েও তারা অবৈধ সরকারের বৈধতার সার্টিফিকেট আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিএনপি প্রতিদিনই আওয়ামী লীগের দুরাচার-অনাচার আর গণতন্ত্রহীনতার কথা তুলে ধরছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কাছে এটি আন্দোলন মনে হচ্ছে না। তাদের কাছে অন্দোলন মানে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করা। আওয়ামী লীগ যে বিএনপির আন্দোলন টের পাচ্ছে না এটিও বিএনপির অন্দোলনেরই অংশ। যখন টের পাওয়া শুরু করবে তখন তাদের পালানোর পথ থাকবে না। সোমবার পূর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি  জিয়াউর রহমান : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অনারারি জিয়াউর রহমান ওয়ে’র ফলক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, নিজের হীন রাজনৈতিক স্বার্থে শেখ হাসিনা এখন জিয়াউর রহমান, তার পরিবার ও বিএনপির ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। অপপ্রচার চালিয়ে আর শত চেষ্টা করেও শেখ হাসিনা শিকাগোতে জিয়াউর রহমানের নামে সড়কের নামকরণ ঠেকাতে পারেননি। তিনি বলেন, দেশে বিদেশে জিয়াউর রহমানের অবদান স্বীকৃত হচ্ছে। জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্মের স্বীকৃতির জন্য আদালতের  রায়ের প্রয়োজন নেই। সমাবেশে তারেক রহমানের হাতে সম্প্রতি শিকাগো সিটি প্রশাসন কর্তৃক স্থাপিত অনারারী জিয়াউর রহমান ওয়ে’র একটি নাম ফলক হস্তান্তর করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনর সেক্রেটারী অব স্টেটের জেসিহোয়াইট কাউন্সিলের সদস্য ও জিয়াউর রহমান ওয়ে‘র প্রস্তাবক  শাহ মোজাম্মেল নান্টু।
তারেক রহমান বলেন, চোর, খুনি, বদমাশ, সন্ত্রাসী, ব্যাংক লুটেরা ও দুর্নীতিবাজরাই শেখ হাসিনার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য। যিনি যত খারাপ কথা বলবেন, শেখ হাসিনার কাছে তিনি ততই  প্রিয়। তিনি বলেন, জাতিসংঘ যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়েছে হাসিনার এমন মিথ্যাচারেরও জবাব দিয়েছে দেশগুলো। এতে হাসিনা লজ্জা না পেলেও দেশের নাগরিকরা বিব্রত। হাসিনা এখন জঙ্গি জুজুর ভয় দেখাচ্ছেন। এটি হাসিনার কুটকৌশল। তার বাবাও নিজেদের ব্যর্থতা ডাকতে জনগণকে নকশালের ভয় দেখাতেন।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন বলেন, হাসিনা থাকলেই বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত করতে চায়। এবারও জাতিসংঘে গিয়ে তিনি সেটি করে এসেছেন। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। তাই বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত রাখতে হলে দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে হাসিনার বিরুদ্ধে গণঅঅন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
 প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী বক্তব্যে তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা, শেখ মুজিবের হত্যাকা- ও পূর্বাপর পরিস্থিতি এবং দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে নিয়ে কথা বলেন।  তিনি বলেন, কোন একটি সরকারের নৈতিক ও আইনগত ভিত্তি দুর্বল হলে এবং জনসমর্র্থন না থাকলেই সরকার আইনের  দোহাই দিয়ে বেআইনিভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রনে রাখতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আসলে এই সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা নেই, তাদের একমাত্র ভরসা আইনশৃংখলাবাহিনীর পোষাকে তাদের কতিপয় দলীয় ক্যাডার। আর যুবলীগ ছাত্রলীগের নামে সরকারের দলীয় সন্ত্রাসীবাহিনী।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম কয়ছর আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এডভোকেট জয়নাল আবেদীন, এডভোকেট  আহমদ আজম খান, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শিকাগো-র জিয়াউর রহমান ওয়ে’র প্রস্তাবক শাহ মোজাম্মেল নান্টু, তারেক রহমানের বিশেষ উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেক, সিনিয়র সভাপতি আব্দুল হামিদ,  সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সহসভাপতি আব্দুল হাই,  উপদেষ্টা রফিকুল্লাহ।

No comments

Powered by Blogger.