ডেঞ্জার পয়েন্টে ১৬৭ গার্মেন্ট

ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে পারছে না দেশের ১৬৭টি গার্মেন্ট। এসব গার্মেন্টগুলো নিয়ে শঙ্কিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এসব গার্মেন্টে শ্রমিক অসন্তোষ হতে পারে এসব কথা জানিয়ে সময়ে সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাচ্ছেন তারা। দিচ্ছেন নানা পরামর্শ। গত ২৫শে সেপ্টেম্বর এসব বিষয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগেও গার্মেন্ট সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রিসভা কমিটি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের রিপোর্টে বিভিন্ন শ্রমিক ফেডারেশনের তৎপরতা সম্পর্কে রিপোর্ট দিয়েছে। এসব রিপোর্টে ফেডারেশনগুলোর কোন কোন নেতা মাঠ গরমের চেষ্টা করছে তারও বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানার নাম, মালিকের নাম উল্লেখ করে ওই গার্মেন্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রিপোর্ট অনুযায়ী আশুলিয়া এলাকার ৪৭৫টি গার্মেন্টের মধ্যে ২৯টি, টঙ্গী এলাকার ১৮৭টি গার্মেন্টের মধ্যে সাতটি, পল্লবী এলাকার ১৬৬টি গার্মেন্টের মধ্যে সাতটি, নারায়ণগঞ্জের ৩৩১টি গার্মেন্টের মধ্যে ৩৬টি, মোহাম্মদপুরের ৩৫টি গার্মেন্টের মধ্যে চারটি, দক্ষিণ খানের ৯৬টি গার্মেন্টের মধ্যে ১৬টি, মিরপুরের ১২০টি গার্মেন্টের মধ্যে ১১টি, বাড্ডা এলাকার ৬৯টি গার্মেন্টের মধ্যে ৮টি, লালবাগ এলাকার তিনটি গার্মেন্টের মধ্যে তিনটি, ক্যান্টনমেন্টের ৭৬টি গার্মেন্টের মধ্যে তিনটি, কোতোয়ালি এলাকার তিনটি গার্মেন্টের মধ্যে তিনটি, সূত্রাপুর এলাকার চারটি গার্মেন্টের মধ্যে তিনটি, তেজগাঁও এলাকার ৩৭টি গার্মেন্টের মধ্যে ৩টি, সবুজবাগ এলাকার ৭০টি গার্মেন্টের মধ্যে ২৪টি এবং সাভার এলাকার ১০৯টি গার্মেন্টের মধ্যে ৭টি গার্মেন্ট রয়েছে ডেঞ্জার পয়েন্টে। এসব গার্মেন্টে ঈদ ও পূজার আগে বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের রিপোর্টে এসব গার্মেন্ট কারখানার উপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বলেছে, বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে এসব গার্মেন্টে বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এর অন্যথা হলে শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওদিকে গত ২৫শে সেপ্টেম্বর ঈদ ও পূজার আগে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একই বৈঠকে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধে সহায়তা করতে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা চান বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ দুই আহ্বান জানানো হয়। সভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গার্মেন্ট মালিকদের ২৭শে সেপ্টেম্বর থেকে ৪ঠা অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি শ্রমিকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ঈদ-পূজায় মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে পারে সে জন্য সড়কগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর এ বৈঠকের পর পরই ডেঞ্জার পয়েন্টে থাকা গার্মেন্টগুলোর তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছে। এখন তালিকা অনুযায়ী কার্যক্রম হাতে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.