আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আশরাফ গনি l ছবি: রয়টার্স
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গতকাল সোমবার শপথ নিয়েছেন গত এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী আশরাফ গনি। এর ফলে নির্বাচনের ফল জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে টানা ছয় মাসের অচলাবস্থার অবসান হলো। এটাই দেশটিতে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর। খবর রয়টার্স ও বিবিসির। গত ৫ এপ্রিল আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর গনির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ জালিয়াতির অভিযোগ এনে ফল প্রত্যাখ্যান করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই প্রার্থী সম্প্রতি ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছান। চুক্তি অনুযায়ী, গনি প্রেসিডেন্ট হলেন এবং আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের জন্য নিজের পছন্দের একজনকে মনোনীত করতে পারবেন।
জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান ওই চুক্তিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের মঞ্চস্থ করা ধোঁকাবাজি’ বলে আখ্যায়িত করলেও গনি এটাকে ‘বিরাট বিজয়’ আখ্যা দিয়েছেন। গতকাল তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে ১০০ জনের মতো গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। শপথ নেওয়ার পর গনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল্লাহর ভূয়সী প্রশংসা করেন। আর চুক্তি অনুযায়ী নতুন তৈরি করা পদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব নেওয়া আবদুল্লাহ বলেছেন, গনিকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ‘একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বস্ততা ও সততা’র সঙ্গে কাজ করবেন। রাজধানী কাবুলে গতকালের শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের ভাষণের মধ্য দিয়ে। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানে তালেবান সরকারের পতনের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশের প্রেসিডেন্টের পদে থাকা কারজাই এ সময় নতুন সরকারকে সমর্থন দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। কাবুলে বিবিসির সাংবাদিক ডেভিড লয়ান জানিয়েছেন,
শপথ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কাবুলে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেখানে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর না পাওয়া গেলেও বিমানবন্দরগামী একটি সড়কে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। এর বাইরে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাতাকিয়ায় গতকাল একটি সরকারি ভবনে জঙ্গি হামলার খবর দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। এর আগে গত শুক্রবার পূর্বাঞ্চলীয় আরেক প্রদেশ গজনির একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান যোদ্ধারা। এসব ঘটনা গনি ও তাঁর নিরাপত্তা বাহিনীকে যেসব বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, এগুলো তার সামান্য কয়েকটি নিদর্শন।

No comments

Powered by Blogger.