প্রতিরোধের ক্ষীণ চেষ্টা ফিলিস্তিনিদের

গাজায় স্থল অভিযানের প্রথম দিনে উত্তর গাজায় ঢুকে পড়েছে ইসরাইল বাহিনী। ফিলিস্তিনের ইসলামি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কয়েকটি ঘাঁটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাদের এ স্থল অভিযান। সোমবার এক বিবৃতিতে এমনটাই দাবি করেছে ইসরাইল। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে গাজায় অভিযান চালানোর জন্য ইসরাইল সীমান্তে কয়েকদিন আগে থেকেই বিপুলসংখ্যক সেনা ও সামরিক সরঞ্জামের সমাবেশ ঘটিয়েছিল তেল আবিব। এদিকে ইসরাইল বাহিনী প্রতিরোধে ক্ষীণ চেষ্টা চালাচ্ছে ফিলিস্তিন। দফায় দফায় বিচ্ছিন্ন বাধার সৃষ্টি করছে। ওত পেতে থাকা সদস্যদের বিচ্ছিন্ন হামলায় কিছু জায়গায় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এতে বহু সেনা আহত হয়। পরে আহত সেনাদের ইসরাইলে ফিরিয়ে নেয়া হয়। এদিকে গাজায় বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তার জন্য উত্তর গাজা থেকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল বাহিনী। তবে গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা জনগণকে ইসরাইলের ওই নির্দেশ অমান্য করার আহ্বান জানিয়েছে। হামাস বলছে, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ হিসেবে তেল আবিব এ কথা বলেছে এবং তারা জনগণের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে চায়। এদিকে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলের ভেতরে দুটি রকেট ছোড়া হয়েছে। এরপর ইসরাইল পাল্টা কামানের গোলাবর্ষণ করে। সিরিয়া থেকেও গোলান মালভূমিতে রকেট ছোড়া হয়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ইসরাইলের বিমান হামলার জবাবে হামাসও রকেট ছোড়া অব্যাহত রেখেছে। নতুন করে হাইফা,
তেল আবিব, রিশন লিজন ও নেগেভ শহরে রকেট ছুড়েছে হামাস। ফিলিস্তিনি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইসরাইলের : ইসরাইলের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের পাঠানো একটি ড্রোনকে ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। সোমবার এক টুইটার বার্তায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে আসা একটি ড্রোনকে দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী আসদোদের কাছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা ভূপাতিত করা হয়েছে। স্থানটি গাজা থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। সাত দিন আগে গাজায় ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর এই প্রথম কোনো ফিলিস্তিনি ড্রোনকে ভূপাতিত করল ইসরাইল। হামাস জানিয়েছে, বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে তারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে বেশ কিছু ড্রোন পাঠিয়েছে। হামলার জবাবে হামাস গত কয়েকদিনে ইসরাইলের ভেতর প্রায় এক হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছে, অবশ্য এসব রকেট হামলায় ইসরাইলের তরফে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ইসরাইলকে মূল্য দিতে হবে : হামাস : ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, গাজা উপত্যকায় বর্বর আগ্রাসনের জন্য ইসরাইলকে চরম মূল্য দিতে হবে। গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে হামাস এ হুশিয়ারি দিল। রোববার হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরাইল মূল্য দেবে। যে কোনো ঘটনার জন্য হামাস প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আবু জুহরি অভিযোগ করেন, ইসরাইল নিজের স্বার্থে গাজার সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।
ইসরাইলি বোমায় ক্যানসারের জীবাণু
ফিলিস্তিনের গাজায় নিক্ষিপ্ত ইসরাইলি বোমায় ক্যানসারের জীবাণু রয়েছে বলে দাবি করেছেন নরওয়ের অসলো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডাক্তার এরিক ফোসে। এরিক কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ধরেই গাজা উপত্যকায় বাস করছেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রেস টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এরিক বলেন, গাজায় ইসরাইলের বোমার আঘাতে আহতদের মধ্যে ত্রিশ শতাংশই শিশু। আহতদের অধিকাংশেরই শরীরে প্রাণঘাতী ক্যানসারের জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। ইসরাইল ডেন্স ইনার্ট মেটাল এক্সপ্লোসিভ (ডিআইএমই) নামের এক অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করছে গাজার অধিবাসীদের ওপর। এসব বোমা মানব শরীরে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব বোমা আয়তনে ছোট কিন্তু এর ক্ষমতা ভয়ানক এবং বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিস্ফোরণের প্রভাব বিস্তার লাভ করে। আলজাজিরা, এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.