পার্টিতে বুঁদ হতে পারেন ক্লোসে!

ফিটনেস নিয়ে খুব মাথাব্যথা তার। নিজের বাসায় আছে জিম। রুটিন জীবনের বাইরে এক পাও দিতে নারাজ। কিন্তু রোববার বিশ্বকাপ জিততে পারলে আনন্দে পার্টির মধ্যে সেধিয়ে যেতে পারেন। ভুলে যেতে পারেন ফিটনেসের কথা। উন্মাতাল পার্টিতে মনুষ্য পরিচয়ও ভুলে যেতে পারেন! বুদ হয়ে যেতে পারেন। মিরোস্লাভ ক্লোসে বলছেন এমনটাই। আসলে ‘পার্টি অ্যানিম্যাল’ হয়ে যাওয়ার হুমকি দিলেন এ জার্মান! ২০০২ বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হার খুব মনে আছে ক্লোসের। জার্মানির এ দলটিতে সেই ফাইনালের অভিজ্ঞতা কেবল ক্লোসেরই আছে। সঙ্গে আছে কষ্ট। অবশ্য কষ্ট দূর করার এমন সুযোগ আর কোথায় পাবেন। এর মধ্যে বিশ্বকাপে নিজের ১৬তম রেকর্ড গোল করেছেন। ওটা ব্রাজিলের বিপক্ষে। যে ম্যাচে ইতিহাসের লজ্জা ব্রাজিলিয়ানদের উপহার দিয়েছে ৭-১ গোলে হারিয়ে। নিজের ১৩৭তম ম্যাচের অপেক্ষায় এখন ক্লোসে। রোববারের ফাইনাল আর আর্জেন্টিনায় সব মনোযোগ তার। জিতলে কি হবে না হবে তার নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না ক্লোসে, ‘কোনো কিছুর গ্যারান্টি দিতে পারছি না। তবে বিশ্বকাপ জিতলে আমি হয়তো খুব নির্ভার হয়ে যাব। এমনকি আমার ভেতর থেকে পার্টি জানোয়ারটাও বেরিয়ে আসতে পারে।’ ফিটনেস ট্রেনিংয়ে অনুরক্ত ক্লোসে। ক্যারিয়ারের দীর্ঘতার জন্য শরীরটাকে খুব যত্ন করেছেন সারা জীবন।
রোজকার ফিটনেস রুটিনে ফাঁকি দেননি কখনও। নিজের ঘরেই জিম। কিন্তু ইয়োকোহামার কষ্ট ভুলতে পারলে অস্বাভাবিক কিছুও করে বসতে পারেন ক্লোসে! এখন অবশ্য ফাইনাল ছাড়া আর কিছু ভাবার সময় নেই তার, ‘ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়টা উপভোগ করেছি। এর ২৪ ঘণ্টা পর কাজে নেমে পড়েছি। আগামী ম্যাচটায় আবারও আমাদের সামর্থ্যরে পুরোটা দিয়ে খেলতে হবে। ফাইনালে হারলে খুব দুঃখ হয়। সুতরাং, এটি জয়ের সময় এখন।’ ব্রাজিলে এসে ব্রাজিলিয়ান রোনালদোর ১৫ বিশ্বকাপ গোলের রেকর্ড ছুঁয়েছেন। তারপর ভেঙে এখন নিজেই বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোরার। কিন্তু ফাইনাল জিততে না পারলে ষোলোআনাই বৃথা! ক্লোসের কথার সারমর্ম তাই, ‘হ্যাঁ, রোনালদোর রেকর্ডটা এখন আমার। কিন্তু ও নিয়ে ভাবার সময় এখন নেই। ফাইনাল হারলে আমার সর্বোচ্চ স্কোরারের আনন্দ হারিয়ে যাবে।’ ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। দুই গোলই করেছিলেন ক্লোসে। এমন কিছু কি তার ভাবনায় আছে? সেই হারকে প্রেরণা হিসেবে নিতে নারাজ ক্লোসে দলগত সাফল্যের চেতনায় উজ্জীবিত, ‘প্রত্যেক ম্যাচই স্বতন্ত্র। বিশেষ করে ফাইনাল তো বটে। ১২ বছর আগে আমি অনেক তরুণ ছিলাম। এখন দুই ম্যাচে তুলনা চলে না। এ দলে খেলোয়াড়দের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও কমিটমেন্ট অন্যরকম। টিম স্পিরিট কোনো খেলো ব্যাপার নয়। আর এ দলে ২৫-২৬ বছরের খেলোয়াড়ের মধ্যেও পেশাদারিত্ব ও পরিণতভাব খুব।’ এ নিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হচ্ছে জার্মানি। তৃতীয়বার ফাইনালে। গেল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে কোয়ার্টার ফাইনালে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল জার্মানি। ক্লোসে করেছিলেন দুই গোল। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.