‘যারা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে তারা পাকিস্তানের এজেন্ট’ -সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তাঁর তথ্য, যোগাযোগপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘যারা “জয় বাংলা” না বলে “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” বলে তারা পাকিস্তানের এজেন্ট’।

>>রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: ফোকাস বাংলা
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন আয়োজিত সেমিনারে জয় এ মন্তব্য করেন। সেমিনারে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আওয়ামী ঘরানার ব্যক্তিরা অংশ নেন।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) বিরোধী দল বলব না, কারণ তারা সংসদে নেই। তারা “জয় বাংলা” বলে না, বলে “জিন্দাবাদ”। যেটা উর্দু শব্দ। বাংলা ভাষায় “জিন্দাবাদ” বলে কোনো শব্দ নেই। ভাষা আন্দোলনে আমরা উর্দুর বিরোধিতা করেছিলাম। এখনো তারা সেটাই ব্যবহার করে। যারা “জিন্দাবাদ” বলে, তারা বাঙালি নয়, পাকিস্তানের এজেন্ট। তারা দেশ থেকে চলে যায় না কেন? যারা এ দেশে থেকে “জিন্দাবাদ” বলে, তাদের পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত।’
১৯৮০ সালের বাংলাদেশের মানচিত্রে তালপট্টি দ্বীপ ছিল না, দাবি করে জয় বলেন, ‘আমি পরীক্ষা করে এসেছি ১৯৮০ সালের বাংলাদেশের যে মানচিত্র করা হয় সেখানে তালপট্টি দ্বীপ ভারতের অংশ দেখানো হয়। ওই সময় কোন সরকার ক্ষমতায় ছিল? এখন আপনারা তালপট্টি দ্বীপে গিয়ে আন্দোলন করেন। পারবেন না, তবে হ্যাঁ, সাঁতার কাটতে পারবেন।’
এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে শিক্ষার অভাব আছে, মন্তব্য করে জয় বলেন, ‘২৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের মধ্যে আমরা ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার পেয়েছি। কে বিজয়ী হয়েছে? সেই সামান্য অঙ্কটুকুও কি তারা পারেন না। আসলে তাদের মধ্যে শিক্ষার অভাব রয়েছে।’
মানুষ খারাপ কাজ করতে ও শুনতে ভালোবাসে মন্তব্য করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘মিডিয়াতে সংবাদ সেনশনাল করতে সত্য-মিথ্যা মেশানো হয়। কারণ আমরা নোংরা কিছু পছন্দ করি না। তবে কানে নিই। ’৭৫-এ আমরা শুনে গেছি মিথ্যা প্রচার। মিথ্যা প্রচার করে কিছুদিন চালানো যায়, চিরদিন নয়।’

আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সংগঠিত করতে আপনার পরিকল্পনা আছে কি না, একজন অংশগ্রহণকারীর এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা আগামী সাড়ে চার বছর সারা দেশ ট্যুর করার। এর মাধ্যমে দলকে সংগঠিত করব। আগামীকাল শনিবার আমি রংপুরের পীরগঞ্জে যাচ্ছি।’ অপর  এক প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা এখন দেশের কাজে মনোযোগী হয়েছেন। তাঁরা দলকে সময় না দিতে পারলেও কীভাবে দলকে আরও শক্তিশালী করা যায়, সেটা নিয়ে আমি কাজ করছি। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের ১৬ লাখ সদস্যের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ (উপাত্তভিত্তি) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি।’

একজন অংশগ্রহণকারী প্রশ্ন করেন, ‘অনেকে টক শোতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সজীব ওয়াজেদ জয়কে সমান্তরাল করে দেখেন। এ বিষয়ে আপনার মত কী?’ জবাবে জয় বলেন, ‘আমি তাদের মূর্খ মনে করি। তাঁদের প্রতি অনুরোধ, একদম বকলম হয়ে কথা বলবেন না।’

অনলাইনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কীভাবে অপপ্রচার বন্ধ করা যায়, এমন প্রশ্নের জবাব জয় বলেন, ‘অনলাইন বিশাল জায়গা। সেখানে কন্ট্রোল করা যায় না। তারা শুধু মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে না, আমার ফেসবুক পেজেও বাজে কথা লেখে। আমি সেগুলো ডিলিট করে দিই।’

আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিডিয়ার সম্পর্কে দূরত্ব হয়ে গেছে, মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে সমকাল-এর সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘সমুদ্র জয়ের পর ডেইলি স্টার শিরোনাম করে “Cheer Bangladesh”। তার পরও বলা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অমুক পত্রিকা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এটা ঠিক না। আমরা মিডিয়ার সেন্সরশিপ চাই না, নীতিমালা চাই।’ উল্লেখ্য, সর্বাধিক প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক দি ডেইলি স্টার-এর কোনো প্রতিবেদককে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি ও আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন) এ কে আজাদ চৌধুরী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুর রশীদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ এ আরাফাত।

No comments

Powered by Blogger.