আসাম ও ত্রিপুরা দিয়ে ভোট শুরু

ভারতের আসাম রাজ্যের নাগাঁও জেলার কলিয়াবার ভোটকেন্দ্রে
সকাল থেকে ভোটারদের দীর্ঘ সারি। এ কেন্দ্রে ভোট দিতে
সাইকেলে করে এক ব্যক্তি তাঁর বৃদ্ধ মাকে নিয়ে আসেন।
ভোট দেওয়ার পর কালিমাখা আঙুল দেখাচ্ছেন বৃদ্ধা।
ভারতের ষোড়শ লোকসভা নির্বাচন গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে। নয় দফার নির্বাচনের প্রথম দফায় গতকাল আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের ছয়টি আসনে ভোট হয়। আসামে ভোট চলাকালে দু-এক জায়গায় বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। আসামে তরুণ ভোটারদের পাশাপাশি নারীদেরও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে দেখা যায়। সেখানে ভোটার উপস্থিতি ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
আর ত্রিপুরায় ৮৪ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানান। প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা আশুতোষ জিন্দাল সাংবাদিকদের বলেন, ত্রিপুরার একটি আসনের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই-এম) ক্ষমতায় রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সিপিআই-এম ছাড়াও কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যের এই আসনটিতে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সিপিআই-এমের শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, কংগ্রেসের অরুন্ধতী সাহা, বিজেপির সুধীন্দ্র দাসগুপ্ত প্রমুখ। আসামে বর্তমানে বিধানসভায় কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে। গতকাল এই রাজ্যের পাঁচটি আসনের ভোটেও ছিল উৎসবের আমেজ। দিব্রুগড়, জোড়হাট, কালিয়াবর, লখিমপুর ও তেজপুর আসনের নির্বাচনে চা-শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখা যায়। তাঁরা বর্ণিল পোশাকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে হাজির হন। রাজ্যে বেলা তিনটা পর্যন্ত প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়ে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে। ওই আসনগুলোয় মোট ভোটার সংখ্যা ৬৪ লাখ ৪০ হাজার।
ভোট গ্রহণ শুরু হয় সকাল সাতটায়। তবে কয়েকটি স্থানে বৈদ্যুতিক ভোটযন্ত্র (ইভিএম) চালু করতে কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে দেরিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। আসামের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা বলেন, দুপুরের মধ্যেই অর্ধেকের বেশি ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার ‘উত্থান দিবস’ হলেও গতকাল কোথাও বড় ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকটি স্থানে ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। কোনো হামলার হুমকি না থাকলেও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্কাবস্থায় ছিল। আসামের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী পবন সিং ঘাটোয়ার (দিব্রুগড়) ও রানী নারাথ (লখিমপুর) এবং সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের বর্তমান সাংসদ বিজয় কৃষ্ণ। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর ছেলে গৌরব এবার কালিয়াবর আসনে প্রার্থী হন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সবানন্দ সোনোওয়াল লড়ছেন লখিমপুর আসন থেকে। পুলিশ জানায়, কালিয়াবর আসনের একটি ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন। দিব্রুগড়, কালিয়াবর, লখিমপুর ও তেজপুরের বিভিন্ন কেন্দ্রে অন্তত ৪০টি ইভিএম ঠিকমতো কাজ করেনি। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আসামে কংগ্রেসের জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাজ্যে দ্বিতীয় পর্বে শিলচর, করিমগঞ্জ ও দিফু (স্বায়ত্তশাসিত জেলা) আসনে ১২ এপ্রিল দ্বিতীয় পর্বে ভোট নেওয়া হবে। তরুণ গগৈ বলেন, এই রাজ্যে মোদির জাদু নেই, বরং তরুণ গগৈর জাদু রয়েছে। তিনি আগে ১০টি আসনের কথা বললেও এখন বলছেন, কংগ্রেস আরও বেশি আসনে জয়ী হবে। আইএএনএস, এনডিটিভি ও জি নিউজ।

No comments

Powered by Blogger.