থাই নির্বাচন বাতিলে বিক্ষোভ

নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আরও বড় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে থাইল্যান্ডের বিরোধী দল। রাজধানী ব্যাংকক তাই আবারও বিক্ষোভে অচল। ফলে থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অচলাবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকা থেকেই যাচ্ছে। নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ না নেয়ায় এতে সরকারি দলের বিজয়ের সম্ভাবনা শতভাগ নিশ্চিত। আর একইভাবে বিরোধী দলও আন্দোলনে অবিচল। রাজধানী ব্যাংককের প্রধান প্রধান কেন্দ্রগুলো এখনও বিরোধীদের দখলে এবং কার্যত অচল। ব্যাংককের কেন্দ্রে হাজারো সমর্থক নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিরোধী দলের নেতা সুথেপ থাগসুবান। রয়টার্স জানিয়েছে, অন্তত ৩ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছেন সেখানে। সুথেপ থাগসুবান জানান, তিনি দলকে নতুন করে গড়ে তুলবেন। কেননা তিনি চান না, তার দলের সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সমর্থকদের হামলার শিকার হন বা তাদের কোনোরকম ক্ষতি হয়। তিনি এও জানান, ইংলাকের সমর্থকরা যে তাদের ওপর হামলে পড়বে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। বিরোধী দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক রিফর্ম কমিটি বা পিডিআরসি মুখপাত্র আকানাত প্রমফান জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এবং যারা এই যুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকবে, তারাই জয়ী হবে। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ এবং থাইল্যান্ড স্কলার ক্রিস বেকার রয়টার্সকে জানিয়েছেন,
সুথেপের আন্দোলনে কিছুটা ধস নামলেও কোনো এক অজানা শক্তিশালী দল তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। বিরোধীদের মিছিলের সময় এক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, সংবিধান অনুযায়ী এক দিনেই নির্বাচন হতে হবে, অর্থাৎ আবারও ভোটগ্রহণ হলে সেটা হতে হবে ওই দিনেই, যা হয়নি। ফলে এই নির্বাচন বাতিল করতে হবে। তাই পুরো রাজধানী অচল করে দিয়ে আন্দোলন চলতে থাকবে বলে জানান তিনি। ব্যাংককের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত সরকারি অফিসে, যেখানে ইংলাক বৈঠকে বসেছেন, সেটাও ঘেরাও করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে বেশ কয়েকটি স্থান থেকে অবস্থান তুলে নিয়েছেন সুথেপ সমর্থকরা। সুথেপ জানিয়েছেন, নিরাপত্তার খাতিরেই সেসব জায়গা থেকে তাঁবু উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বাধ্য হয়েছে ফলাফল ঘোষণা না করতে। ধারণা করা হচ্ছে, ফলপ্রকাশ হতে বেশ কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। তবে সরকারি দল বলেছে, ৪ কোটি ৪০ লাখ ভোটারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। তাদের কথা অনুযায়ী, রাজধানী ব্যাংকক এবং দক্ষিণাঞ্চলে বিরোধীদের ঘাঁটি রয়েছে, এমন কেন্দ্রগুলোতেই কেবল ভোটগ্রহণ ব্যাহত হয়েছে। শ্রমমন্ত্রী চালের্ম ইয়ুবামরুং জানিয়েছেন, তার দল ফিউ থাই পার্লামেন্টের ৫০০টি আসনের মধ্যে অন্তত ২৬৫ থেকে ২৮৯টি আসন পাবে। নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে এক পঞ্চমাংশ আসনে ভোট নেয়া সম্ভব হয়নি। নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক জয়ী হলেও তিনি তত্ত্ববধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে পারবেন। কারণ যতক্ষণ না স্থগিত আসনে ভোট না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হচ্ছেন না বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। ব্যাংককের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা ইন্সটিটিউটের পরিচালক থিতিনান পংসুথিরাক বলেন, ‘তিনি তত্ত্ববধায়ক থাকবেন। আর একজন তত্ত্ববধায়কের গোটা দেশের ওপর একচ্ছত্র কতৃত্ব থাকে না।’
সরকার গঠনের যুদ্ধ
* যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এবং যারা এই যুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকবে, তারাই জয়ী হবে
* এক দিনেই নির্বাচন হতে হবে, অর্থাৎ আবারও ভোটগ্রহণ হলে সেটা হতে হবে ওই দিনেই, যা হয়নি। ফলে এই নির্বাচন বাতিল করতে হবে
নির্বাচনী বিধিমালা
ইংলাক জয়ী হলেও তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে পারবেন। স্থগিত আসনগুলোতে ভোট না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন না

No comments

Powered by Blogger.