দুই পক্ষই শিশুদের নির্যাতন করছে

সিরিয়ায় সরকার ও বিদ্রোহীরা উভয়েই শিশুদের অপব্যবহার করেছে৷ সরকারি বাহিনী শিশুদের আটকে রাখছে ও নানাভাবে নির্যাতন করছে৷ আর বিদ্রোহীরা শরণার্থী শিশুদের নিজেদের বাহিনীতে নিয়োগ দিচ্ছে, মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে ও নির্যাতন চালাচ্ছে৷ গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা তুলে ধরা হয়েছে৷ এদিকে সিরিয়ার আলেপ্পোয় ব্যারেল বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ওই হামলাকে ‘সিরিয়া সরকারের নতুন বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড’ বলে আখ্যা দেন৷ ওই হামলায় দেড় শ মানুষ প্রাণ হারায়৷ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় প্রায় তিন বছর ধরে সহিংসতা চলছে৷ শুরুর দিকে সরকারি বাহিনী শিশুদের আটক ও নির্যাতন করে৷ তবে বিদ্রোহীরা সংগঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও শিশুদের অপব্যবহার শুরু করে৷ বিদ্রোহীরা এ জন্য শরণার্থী শিশুদের বেছে নেয়৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীতে শিশুদের নিয়োগ দেওয়ার মতো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু বিদ্রোহী বাহিনী ও বিভিন্ন মিলিশিয়া বাহিনীতে শিশুদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি চোখে পড়েছে৷ বিদ্রোহী ও মিলিশিয়াদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলোতে তাদের তল্লাশিচৌকিতে ১৮ বছরের কম বয়সীদের অস্ত্র হাতে দািয়ত্ব পালন করতে দেখা যায়৷ অনেক সময় মুখোমুখি লড়াইয়েও বিদ্রোহীদের পক্ষে লড়তে দেখা যায় শিশুদের৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান িক মুন বলেন, সরকারি বাহিনী শিশুদের ‘গ্রেপ্তার করছে, দিনের পর দিন বন্দী রাখছে ও নির্যাতন চালাচ্ছে৷ বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করছে অভিযোগ এনে এই নির্যাতন চলছে৷’ প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি বাহিনীর হাতে আটক বেশির ভাগ শিশুকেই পূর্ণবয়স্ক বন্দীদের প্রকোষ্ঠে রাখা হয়৷
এ কারণে সেখানেও শিশুরা নির্যাতনের শিকার হয়৷ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্যাতনের শিকার বেশ কিছুসংখ্যক শিশুকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে তাদের ওপর নির্যাতনের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়৷ শিশুদের ধাতব তার ও লাঠি, চাবুক, কাঠের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়; বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়, হাত-পায়ের নখ টেনে তুলে ফেলা হয়৷ বন্দী শিশুরা যৌন সহিংসতারও শিকার হয়৷ কখনো কখনো বলাৎকার করা বা তা করার হুমকি দেওয়া হয়, সিগারেটের আগুনে শরীর ঝলসে দেওয়া হয়, ঘুমাতে বাধা দেওয়া হয় ও স্বজনদের ওপর নির্যাতন দেখতে বাধ্য করা হয়৷ প্রতিবেদনে ২০১১ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়৷ নিরাপত্তা পরিষদ এই প্রথম সিরিয়ার শিশুদের ওপর সহিংসতার বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন হাতে পেল৷ সময়সীমা মানতে ব্যর্থ: যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় প্রণীত রূপরেখায় বেঁধে দেওয়া সময়মতো নিজের ভূখণ্ড থেকে রাসায়নিক অস্ত্র সরিয়ে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে সিরিয়া৷ মার্কিন সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্ড্রু ওয়েবার বলেন, সিরিয়া অস্ত্র সরিয়ে ফেলার সময়সীমা পার করে ‘নিজের পায়েই কুড়াল মারছে’৷ ৫ ফেব্রুয়ারি নিজের ভূখণ্ড থেকে সব রাসায়নিক অস্ত্র সরিয়ে ফেলতে রািজীহলেও তা করতে ব্যর্থ হয়েছে বাশার সরকার৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অস্ত্র সরিয়ে ফেলার গতি বাড়াতে বাশার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে৷ আল-জাজিরা ও বিবিসি৷

No comments

Powered by Blogger.