অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় থাকা যাবে না: খালেদা জিয়া

বর্তমান সরকার জনগণের সরকার নয় দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, তারা জনগণের সরকার নয় বলেই দেশের মানুষের ওপর নির্বিচারে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে।
এই সরকার একটি দুর্নীতিবাজ সরকার। গত পাঁচ বছরে তারা জনগণের সম্পদ লুট করেছে। তিনি বলেন, সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ অতি অল্প দিনের। অল্প দিনেই তাদের বিদায় নিতে হবে। অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় থাকা যাবে না। বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, এই দুর্নীতিবাজ সরকার দেশের কল্যাণ করতে পারবে না। তারা সবচেয়ে বেশি ভয় পায় দেশের জনগণকে। ২৯শে ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রেসি আহবান করেছিলাম। জাতীয় পতাকা নিয়ে মানুষ আসবে। কিন্তু দুই দিন আগে আমাকে গৃহবন্দি করেছে। সারা দেশে তারা অবরোধ করেছে। এই হল সরকার। যদি জনগণের সরকার হতো তাহলে তারা তা করতে পারতো না। আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম তখন কোন দিন এভাবে কর্মসূচিতে বাধা দেইনি। তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছে। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা সম্পূর্ণ অবৈধ সরকার। খালেদা জিয়া বলেন, অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় থাকা যায় না। বেশি দিন থাকা যাবে না।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, কারা হামলা করছে সরকার তা বের করতে পারছে না। কিন্তু দায় চাপাচ্ছে বিরোধী দলের ওপর। সরকার মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
সাতক্ষীরায় সরকারি বাহিনী সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সেখানে এমন অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে যে মানুষের বিশ্বাস হচ্ছে না দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এতো নির্মম কাজ করছে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। স্বাধীনতার ৪২বছর পর আবার আমরা স্বাধীনতা হারাতে যাচ্ছি। তাই আবার আমাদের দেশ রক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ নির্বাচনে সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মানুষ ভোট দিতে যায়নি। এটি কোন নির্বাচন নয়। অবিলম্বে নির্বাচন দিন। জনপ্রিয়তা যাচাই করুন।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মনে করে থাকেন গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকবেন এটা হবে না। অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা চাই না। শান্তি চাই। অবিলম্বে নির্বাচনের জন্য আলোচনার পরিবেশ তৈরি করুন। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সারা দেশে চালিয়ে যেতে চাই।
পেশাজীবীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, আইনজীবীদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের ওপর হত্যা নির্যাতন চালানো হচ্ছে। জেলে নেয়া হচ্ছে। এভাবে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে শেষ রক্ষা হবে না। এই সরকার সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি একটি পত্রিকার কপি তুলে ধরে বলেন, এই সরকার সন্ত্রাসীদের সরকার।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আজ্ঞাবহ ও মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন। এই কমিশন দিয়ে কোন নির্বাচন স্ষ্টুুভাবে করা যাবে না। সরকারের বাইরে তারা যেতে পারে না। কথা বলার কোন সাহস রাখে না। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট পড়েনি। কিন্তু ফল ঘোষণার জন্য তিন দিন সময় নিয়ে নির্লজ্জভাবে ৪০ ভাগ ভোট দেখিয়েছে।
বেলা দুইটা থেকে শুরু হওয়া সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি ও ১৮ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

No comments

Powered by Blogger.