কাবুলে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ২১

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি রেস্তোরাঁয় আত্মঘাতী বোমা হামলা ও গুলিতে ১৩ বিদেশিসহ ২১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ কর্মকর্তাও। তালেবান এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও সরকারি কর্মকর্তারা জানান, কাবুলের জনপ্রিয় ট্যাভরনা দু লিবান রেস্তোরাঁয় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথমে একজন আত্মঘাতী হামলাকারী রেস্তোরাঁটির সুরক্ষিত প্রবেশদ্বারে গিয়ে নিজের পোশাকের ভেতরে স্থাপন করা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর দুজন জঙ্গি ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। রেস্তোরাঁর সহকারী বাবুর্চি আতিকুল্লাহ বলেন, ‘আমরা রান্নাঘরে ছিলাম। হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ শুনতে পাই। এরপর চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। পরে আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাই।’ নিহত আইএমএফ কর্মকর্তার নাম ওয়াবেল আবদুল্লাহ। লেবাননের নাগরিক ওয়াবেল আফগানিস্তানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কর্মকর্তা। রেস্তোরাঁটির লেবাননি মালিকও নিহত হয়েছেন। বিদেশি অন্যদের মধ্যে দুজন ব্রিটিশ ও দুজন কানাডীয় নাগরিক। এ ছাড়া আফগানিস্তানে মোতায়েন ইউরোপীয় পুলিশ মিশনের একজন ডেনিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের নিহত চার কর্মীর জাতীয়তা নিশ্চিত করা হয়নি। বাকি আটজন স্থানীয় মানুষ। এ ছাড়া তিন হামলাকারীই নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
কূটনীতিক, ত্রাণকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বিদেশি নাগরিক এবং আফগান কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা কয়েক বছর ধরে নিয়মিত খেতে যেতেন ট্যাভরনা রেস্তোরাঁয়। শুক্রবার আফগানিস্তানে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সেখানে লোকের সমাগম ছিল অনেক বেশি। কাবুলের অন্যান্য রেস্তোরাঁর মতো ট্যাভরনাতেও কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল। মূল দরজায় সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীর পাশাপাশি ইস্পাত-নির্মিত অন্তত দুটি নিরাপত্তা-দরজায় তল্লাশির পরই রেস্তোরাঁটির ভেতরে ঢোকা যায়। গতকাল শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমার আঘাতে ধ্বংসের চিহ্ন চোখে পড়ে। ধ্বংসাবশেষে পরিণত হওয়া রেস্তোরাঁর মূল ফটকের সামনে পড়ে ছিল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি গাড়ি। কাবুল পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ জহির বলেন, ‘আমাদের সর্বশেষ হিসাবমতে, হামলায় ২১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন বিদেশি এবং আটজন আফগান নাগরিক। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন নারী। এ ছাড়া পাঁচজন আহত হয়েছেন।’ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বেসামরিক লোকজনের ওপর এ হামলা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে তালেবান। সংগঠনটির মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদের দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে পারওয়ান প্রদেশে চালানো মার্কিন বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতে এই হামলা করা হয়েছে। এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.