প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০, কাঁচামরিচ ১২০ by মফিজুল সাদিক

রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের দাম। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০,  ভারতীয় নাসিক মোটা পেঁয়াজ ৯০, পাকিস্তানি ৯০ ও চায়না পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দুদিন ধরে বার্মিজ পেঁয়াজ বাজারে দেখা যাচ্ছে না। বাজার ভেদে কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

বৃহস্পতিবার নগরীর শ্যামবাজার, নিউমার্কেট, পলাশী কাঁচাবাজার, আজিমপুর কাঁচাবাজার ও মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

প্রতিটি কাঁচাবাজারেই যেন এখন আলোচিত নাম পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ। পণ্য দুটির দাম সামনে আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

নিউমার্কেটের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা আশরাফ উদ্দীন লিটন বাংলানিউজকে বলেন, ‘দুদিন থেকে পেঁয়াজের বাজার বাড়তি। আগামীতে আরো বাড়তে পারে।’

তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যে পরিমাণে পেঁয়াজের চাহিদা, সেই অনুযায়ী আমদানি কম।’

পাইকারি বাজারেও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজের বাজার শ্যামবাজারে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, দুই দফায় বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

এখানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯৫,  ভারতীয় নাসিক মোটা পেঁয়াজ ৮৫, পাকিস্তানি ৮০ থেকে ৮৫ ও চায়না পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শ্যামবাজারের রাজ ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের দেশে যেমন কোরবানিকে সামনে রেখে পেঁয়াজের চাহিদা বেশি, একইভাবে ভারতে দুর্গা পূজার কারণে ভারতেও পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ কম। সামনে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়বে।’

এদিকে, তিন দিন থেকে আবার হঠাৎ করে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। বাজার ভেদে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শুকনা মরিচ ১৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চিনির দাম কেজি প্রতি ১ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়তি:

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলে কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি ৭ টাকা বেড়ে ৮৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সুপার। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম স্থীতিশীল আছে। প্রতি লিটার ১২০ এবং পাঁচ লিটার কোম্পানি ভেদে ৫৭৫ থেকে ৫৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম চড়া:

মোটা ও চিকন চালে কেজি প্রতি ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে। জিরা নাজিরে কেজি প্রতি ২ টাকা বেড়ে ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইলে ১ টাকা বেড়ে ৫৫, বিআর-২৯ চালে দেড় টাকা বেড়ে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আঠাশ চালে ১ টাকা বেড়ে ৪২, মোটা চালে ১ টাকা বেড়ে ৩৫ এবং স্বর্ণা চালে ১ টাকা বেড়ে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিশ্বাস এগ্রো ফুড লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুরশিদ নিয়াজের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘মিলে চালের দাম বাড়েনি। তবে বর্তমানে ট্রাকগুলো কোরবানির পশু বহন করার কারণে তারা চাল বোঝাই বাদ দিয়ে পশু বোঝাইয়ে ব্যস্ত। এর ফলে অনেক ট্রাকচালক বেশি ভাড়া চেয়ে বসছে। সে কারণে হয়ত ঢাকায় চালের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।’

সবজির বাজারও চড়া: 

রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দামও চড়া। নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি সিম ৮০, পটল ৩৫, বেগুন ৫০, গাঁজর ৬০, ঢেঁড়স ৬০, পেঁপে ২০, শসা ৫০ ও করলা ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কমেছে মাংস ও ডিমের দাম:

গরু, ছাগল ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার ১৩০, গরুর মাংস ২৭৫ ও খাসির মাংস ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হালিপ্রতি ফার্মের লাল ডিম ৩০, সাদা ৩০, হাঁস ৩৮ ও দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

স্থিতিশীল মাছের বাজার:

মাছের বাজার স্থিতিশীল আছে। পলাশী কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৩০, মাঝারি কাতলা ২০০ থেকে ২৫০, বাইলা ৩৫০,  মেনি ২৫০, মাঝারি শিং ৬০০, সরপুঁটি ৩০০, বড় রুই ৪০০, ও মাঝারি কাতলা ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ইলিশের দাম কিছুটা বাড়তি। ৯শ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ ৪৫০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে নগরীতে।

কমেছে মশুর ডালের দাম:

প্রতি কেজি দেশি মশুর ডাল ৫ টাকা কমে ১০০ এবং ভারতীয় মোটা মশুর ডালে ১০ টাকা কমে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নেপালি চিকন দানা মশুর ডাল ১১৫ থেকে ১২০, মুগ ডাল (মানভেদে) ১০০ থেকে ১২০, অ্যাংকর ডাল ৪৩ থেকে ৪৫ , ছোলা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কমেছে আলুর দাম। প্রতি কেজি আলু ১২ থেকে ১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.