হানিফকে পদত্যাগ করে জনপ্রিয়তা যাচাই করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিশেষ সহকারী মাহবুব উল আলম হানিফকে পদত্যাগ করে জনপ্রিয়তা যাচাই করতে বলেছেন। কুষ্টিয়ার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তর্কে জড়ানোর এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা হানিফকে এ কথা বলেন।
গত ৯ই অক্টোবর গণভবনে আটটি জেলার নেতাদের বৈঠকে কুষ্টিয়া জেলার সংসদীয় আসনে মনোনয়ন নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে হানিফ দলীয় সভানেত্রীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। এর এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। বৈঠকে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, কথা বলার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে এ নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, অভিভাবক হিসেবে দলীয় সভানেত্রী এমন নির্দেশনা দিতেই পারেন। তবে বিষয়টি সিরিয়াস নয়। নিজেদের মধ্যে আলোচনার প্রসঙ্গক্রমে এমন বক্তব্য আসে। এদিকে এ ঘটনার পর বৈঠকে অংশ নেয়া নেতারাই বিষয়টি বাইরে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম হানিফ মানবজমিন অনলাইনকে জানান, পদত্যাগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত থাকলে সেটা সবাই জানবে। এটি গোপনীয় কিছু নয়। এ নিয়ে অতিরঞ্জিত আলোচনা দুঃখজনক।

দলের লাইমলাইটে থাকা মাহবুব উল আলম হানিফ প্রায় সময়ই সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দলীয় সভানেত্রীর আস্থাভাজন হিসেবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান বলেও আলোচনা আছে। হঠাৎ করে তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেয়ায় দলেই নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা জানিয়েছেন, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কামরুল আরেফিন কুষ্টিয়া-২ আসনে মহাজোটের প্রার্থী বদল করে মাহবুবউল আলম হানিফকে মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানালে তা নাকচ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। কিন্তু এ আসনে প্রার্থী হতে চেষ্টা করছেন হানিফ। বৈঠকে কুষ্টিয়ার তৃণমুল নেতারা জানিয়েছেন, হাসানুল হক ইনু মহাজোটের মনোনয়ন পেলেও বিজয়ী হতে পারবেন না। হানিফের পক্ষে নেতাদের এমন বক্তব্য দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী তার বিশেষ সহকারির উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসলে অনেকেই জনপ্রিয় হন। ক্ষমতা দেখাতে পারেন। পদত্যাগ করে এলাকায় যাও। দেখি তুমি কত জনপ্রিয়। এসময় হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারির পদ নিয়ে তিনি নিজেও অস্বস্থিতে আছেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব (আরপিও) অধ্যাদেশ অনুযায়ী তুমি নির্বাচন করতে পারবে না। তবে হানিফ এক্ষেত্রে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, আরপিওর বিধান তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, নেতাকর্মীদের সামনেই কুষ্টিয়ার আসন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও মাহবুব উল আলম হানিফের মধ্যে কথা হয়েছে। এর এক পর্যায়ে তিনি পদত্যাগ করে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের কথা বলেন। এ নেতা জানান, প্রসঙ্গটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারির পদ। সম্ভবত এ পদ থেকেই তিনি পদত্যাগের কথা বলেন।

No comments

Powered by Blogger.