এসব চিকিৎসকের উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত

ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন
অনলাইনে প্রথম আলো (prothom-alo.com) নিয়মিত পড়া হয় ১৯০টি দেশ থেকে। পড়ার পাশাপাশি পাঠকেরা প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত দেন। তাঁদের এ মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।
বিদ্যুৎ আমদানি ও রামপালের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ দেশের ভেতরে সঞ্চালন করা ও বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে প্রকাশিত খবরে মতামত জানিয়ে সোহান মিহাফ লিখেছেন: ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, সুন্দরবন তাঁদেরও। কিন্তু সুন্দরবন ধ্বংস হলে ভারতের কিছুই হবে না। কারণ, তাদের আরও অনেক বন আছে। কিন্তু আমাদের ওই ছোট বনটিই সম্বল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভারত সরকার বা ভারতের জনগণ আপনাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি, করবেও না। এ দেশের জনগণের কাছেই ভোট চাইতে হবে আপনাকে। যত দ্রুত পারেন, এ বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করুন। না হলে এ কূল-ও কূল সবই হারাবেন। হাবিবুল্লাহ: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমার মায়ের মতন। আমি সন্তানতুল্য আবদার নিয়ে বলছি, দেশের স্বার্থে এত বড় আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবেন না। অতীতেও ফারাক্কা বাঁধের বিরোধিতা করে এ দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিল। মওলানা ভাসানী লংমার্চ করেছিলেন। কিন্তু আপনারা তখন শোনেননি। ভারতকে বাঁধ তৈরি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তার ফল আজ দেশের জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। সাব্বির আহমেদ: সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি লংমার্চ করেছে। এ ছাড়া বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির বিরোধিতা করেছে। এত জনমতকে উপেক্ষা করে জনবিরোধী একটি প্রকল্প চালু করা সরকারের একগুঁয়েমি মানসিকতারই পরিচয় বলে মনে হয়। নাফিয়া সারাওয়াত: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ যখন শিল্পোন্নত দেশগুলোর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে, ঠিক তখনি বাংলাদেশ নিজেই নিজ পরিবেশ, বিশেষ করে নিজ দেশের ম্যানগ্রোভ বনটি ধ্বংসের মতো একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে!
সাকা চৌধুরী ন্যায়বিচার পাবেন, যদি...
যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রশ্ন করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ন্যায়বিচার পাবেন। তাঁর এ বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এস এম আপেল মাহমুদ লিখেছেন: বিএনপির বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীরা ১৯৭১ সালে যাঁদের হত্যা করেছে, তাঁদের ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত হবে না। শুধু সাকাচৌ, সাঈদী বা নিজামীদের মতো অপরাধীদেরই ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। যারা বাবা-মা, স্বামী-সন্তান হারিয়েছে, যে নারীরা ইজ্জত হারিয়েছেন, তাঁরা বিএনপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ কেউ নন। দলটির কাছে মুখ্য হলো খুনিদের আন্তর্জাতিক মানের বিচারের সুযোগ দিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া! কয়েক দিন আগেও বিএনপির যে জোয়ার শুরু হয়েছিল, তা আপনাদের এসব রাজাকার-মার্কা কথায় এখন ভাটায় পরিণত হয়েছে। মাহবুব লিখেছেন: ভেবেছিলাম জনসমর্থন তাঁদের দিকে ঝুঁকবে। কারণ মানুষ পরিবর্তন চাইছিল। কিন্তু এখন দেখছি, রাজাকারদের দালালি ছাড়তে পারে না, এমন নেতাদের ক্ষমতায় বসালে আমাদের আম-ছালা দুই-ই হারাতে হবে। সাজ্জাদ হোসেন: নির্দলীয় সরকারের মর্ম যদি এটাই হয়, তবে সে নির্দলীয় সরকার না আসাই মঙ্গল। মানুষ সৎ নিয়তে নির্দলীয় সরকার চেয়েছিল, কিন্তু বিএনপি তা রাজাকার বাঁচাতে ব্যবহার করতে চায়। মোয়াজ্জেম হোসেন নিলু: ‘সাকাচৌ ন্যায়বিচার পাবেন’ এ কথায় ফখরুল কী বোঝাতে চাইছেন? সাকাচৌ অবশ্যই ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এখন আপনারা যাঁরা তাঁর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, তাঁদের বিচার হওয়া দরকার।
ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ল্যাবএইড ঘেরাও
ল্যাবএইড হাসপাতালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে—এমন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্রছাত্রীরা ওই হাসপাতাল ঘেরাও করেছেন। এমন খবরে মতামত জানিয়ে মীর দিদারুল হক লিখেছেন: এসব চিকিৎসক ও হাসপাতালের সাজা হওয়া উচিত। এই চিকিৎসকেরা সরকারি হাসপাতালে কোনোমতে কর্তব্য শেষ করে ব্যক্তিগতভাবে রোগী দেখার জন্য ছোটেন বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। সেখানে রোগীরা অসহায়। দরদস্তুর করার কোনো সুযোগ থাকে না। তাই সেখানে রোগীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেন এসব ডাক্তার। মমিন: ল্যাবএইড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অনেক আগে থেকেই আছে এবং অভিযোগের পরিমাণটা অনেক বেশি। যথাযথ তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে এ ধরনের হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শান্তনু: প্রত্যেক চিকিৎসক এখন ব্যক্তিগত সম্পদ অর্জনে ব্যস্ত-ত্রস্ত। রোগী বাঁচল, না মরল—সেদিকে তাঁদের কোনো খেয়াল নেই। এসব চিকিৎসকের উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত। মোস্তাফিজুর রহমান জেরী: প্রতিবাদ চলবেই। সফল হবে, নাকি বিফল হবে—সে চিন্তা করেন প্রবীণেরা। আমরা নবীন। আমাদের সংগ্রাম চলবেই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। লক্ষ রাখুন, যাতে দোষীরা বিদেশে পালাতে না পারে। ওদের হাত অনেক লম্বা। কারণ, ওদের টাকা আছে। তবে পালাতে পারবে না।
সাকা চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। এ সংবাদে মতামত জানিয়ে কিবরিয়া লিখেছেন: রায় তো ৪২ বছর আগে ১৯৭১ সালেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার হয়েছে, এটাই বড় কথা। মামুন খান: এক অনলাইন পত্রিকাতে এক দিন আগেই রায় ফাঁস হয়ে গেল! ব্যাপার কী? এত নিরাপত্তার মধ্যেও যদি জাতীয় ও স্পর্শকাতর ব্যাপারগুলো ফাঁস হয়ে যায়, তবে তা ভীষণ উদ্বেগের ব্যাপার। মোশাররফ হোসেন: বলা হচ্ছে, রায় ছয় মাস আগে লেখা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ছয় মাস আগে লেখা রায় ছয় মাস পর রায়ের মাত্র এক দিন আগে ফাঁস হলো কেন? কাওসার উদ্দিন: আইন সবার জন্য সমান। অন্যায়ের শাস্তি পেতেই হবে। শান্ত: এই শয়তানের ফাঁসি না হলে, সময়ের কাছে নিজেকে অসহ্য বলে মনে হতো। মুছে দেওয়া হোক শয়তানের অট্টহাসি। দ্রুত কার্যকর করা হোক তাঁর ফাঁসি। আমরা কালক্ষেপণের তামাশা চাই না, রাজনৈতিক দালালিও দেখতে চাই না। শাকিল মণ্ডল: স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা যেমন কঠিন, তেমনি আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার চেয়ে, তাদের শাস্তি দেওয়া কঠিন হয়ে গেছে। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট, কিন্তু তা কার্যকর হবে কি না, সেই চিন্তা থাকছেই। আশা করি, জনগণ আশাহত হবে না।

No comments

Powered by Blogger.