নাশকতার মধ্য দিয়ে হরতাল শুরু

বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনার মধ্য দিয়ে আজ রোববার ভোর ছয়টা থেকে শুরু হয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতাল। হরতাল শুরুর আগে ও পরে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় হরতালকারীরা বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ ও মিছিল করেছে।
পুলিশ এসব ঘটনায় ১৫ জনকে আটক করেছে।

গাবতলী: ভোর চারটার দিকে গাবতলী বিআরটিসি বাস ডিপোতে থেমে থাকা দুটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাস দুটির আসনগুলো পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে একজনকে আটক করে দারুস সালাম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশের মিরপুর বিভাগীয় উপকমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বিআরটিসির কোনো কর্মচারী এ ঘটনার জন্য জড়িত বলে সন্দেহ করছেন তাঁরা। ডিপোর পাশে উঁচু দেয়াল। সেটা টপকে বাইরের কারও পক্ষে আগুন দেওয়া কঠিন। এ কারণে সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে আটক হওয়া ব্যক্তির নাম বলতে পারেননি তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা নীলুফার ইয়াসমিন জানান, এতে ৪৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মিরপুর: ভোর ছয়টার দিকে মিরপুর প্রশিকা ভবনের মোড়ে ব্যানার নিয়ে মিছিল করে ছাত্রশিবির। পুলিশ মিছিলকারীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করে মিরপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ইমতিয়াজ আহমেদ প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আটক হওয়া ব্যক্তিদের এই এলাকায় বড় কোনো নাশকতার উদ্দেশ্য ছিল। তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ পেট্রলবোমা ও লিফলেট পাওয়া যায়।
তেজগাঁও: ভোর ছয়টার দিকে তেজগাঁওয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের গলিতে ব্যানার হাতে মিছিল করে যুবদল। সেখানে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। তবে সেখান থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর ছাত্রদলের ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী নাবিস্কো মোড়ের উত্তরপাশে মিছিল বের করেন। তাঁরা তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। পুলিশ ধাওয়া দিয়ে একজনকে আটক করে।
এদিকে শ্যামলী রিং রোডে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে চারটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগীয় পুলিশের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

কেরানীগঞ্জ: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় হরতালের সমর্থনে সকাল সাড়ে আটটার দিকে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর কাছে ছয়-সাতটি যানবাহন করে এসে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পিকেটারদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েকটি রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে চারজন গুলিবিদ্ধসহ সাতজন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদল।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার যুবদলের সভাপতি মোকাররম হোসেন জানান, গুলিবিদ্ধ চারজন হলেন থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক রুপন মিয়া, যুবদলের সদস্য মিরাজ হোসেন, ছাত্রদল নেতা মো. সেলিম। তাঁদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে।
তবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জামাল উদ্দিন হরতালে ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও চারজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে বলেন, ‘আমি ওই এলাকায় ছিলাম না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’
এদিকে ভোর ছয়টার দিকে ঢাকা-মাওয়া রুটের আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হরতালকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

No comments

Powered by Blogger.