ইসলামপন্থিদের হুমকির মুখে সুন্দরী প্রতিযোগিতা

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ বা বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা৷
কিন্তু এবার, সেই আয়োজন শুরুর আগে এর একেবারে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইসলামপন্থি দলগুলো, এমনকি স্বয়ং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রীও৷ ৮ই সেপ্টেম্বর৷ ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বসতে যাচ্ছে তারার মেলা৷ বিশ্বের সব সুন্দরীদের পদচারণায় মুখরিত হতে চলেছে বালি৷ কিন্তু তার মাত্র এক সপ্তাহ আগেই কিনা বিনা মেঘে বজ্রপাত! আয়োজনকদের প্রতিযোগিতা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী সুরিয়াধর্মা আলি৷ মুসলিম অধ্যুষিত দেশটিতে এ ধরনের আয়োজন উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি৷
মন্ত্রীবর অবশ্য গত সপ্তাহেই আয়োজনকদের জানিয়েছিলেন যে, তাদের দেশের শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা এ আয়োজনের বিপক্ষে৷ এরপর আর কোনো তর্কে না গিয়ে আয়োজকরা ‘সুইম সুট' বা বিকিনি রাউন্ডটি প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেন৷বৃহস্পতিবার রাতে দেয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রী সুরিয়াধর্মা আলি জানান যে, সুন্দরী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ঘোষণা করার পর থেকেই ইন্দোনেশিয়ার উলেমা কাউন্সিল এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছে৷ তাঁদের মতে, ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, নারীকে তাঁর দেহের বেশিরভাগ অংশই আবৃত রাখতে হবে৷ তবে ধর্ম বিষয়ক এই মন্ত্রীই প্রথম সরকারি কর্মকর্তা, যিনি এই প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে জনসমক্ষে বিরোধিতা করেছেন৷ তবে তাঁর মতকে সমর্থন জানিয়েছে দেশটির জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা৷ তারা বলছে, নারীদেহ প্রদর্শনের এই আয়োজনে তাদের সমর্থন নেই৷ স্থানীয় আয়োজকরা অন্যদিকে বলছেন, মন্ত্রীর একার কথায় এত বড় আয়োজন ভেস্তে যেতে পারে না, কেন না এটা তাঁর আওতাধীন নয়৷ অনুষ্ঠানটিই অবশ্যই হওয়া উচিত৷স্থানীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান আরসিটিআই-এর কর্পোরেট সেক্রেটারি আদজি এস সোরাথমাদজি বার্তা সংস্থা এএফপি-কে জানান, ইন্দোনেশিয়া কোনো ইসলামি রাষ্ট্র নয় এবং এ আয়োজনটিও কোনো ধর্ম সম্পর্কিত নয়, বরং অনেকটাই সংস্কৃতি বিষয়ক৷যদিও ইন্দোনেশিয়া একটি ইসলাম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ৷ কিন্তু ইসলাম তাদের রাষ্ট্র ধর্ম নয় এবং সংবিধানে সব ধর্মের সমান মর্যাদা দেয়া হয়েছে৷আগামী মাসের ২৮ তারিখে জাকার্তায় প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব হওয়ার কথা৷ সেসময় অনুষ্ঠানস্থলে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে কট্টরপন্থি ইসলামি গ্রুপ ইসলামিক ডিফেন্ডারর্স ফ্রন্ট৷
প্রসঙ্গত, ‘মিস ওয়ার্ল্ড' সুন্দরী প্রতিযোগিতাটি যেখানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, সেই হিন্দু অধ্যুষিত বালি দ্বীপটি পর্যটনস্থান হিসেবে বেশ জনপ্রিয়৷ সেখানে প্রায়ই সূর্যস্নানের জন্য বিকিনি পড়ে নারীরা সৈকতে বসে থাকেন এবং এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনোদিন প্রতিবাদও করেননি৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.